• পর্যটনে শ্রীবৃদ্ধির লক্ষ্যে মুর্শিদাবাদে হেরিটেজ উৎসব  
    বর্তমান | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • তাপস ঘোষ, বহরমপুর: নবাবি আমলের ঐতিহ্যের শহর মুর্শিদাবাদ। এখানকার বিভিন্ন হেরিটেজ স্থাপত্য দেখতে দেশবিদেশ থেকে প্রতিবছর ১২-১৬ লক্ষ পর্যটক আসেন। বিশ্বের পর্যটন মানচিত্রে এশহরকে আরও বড় জায়গা করে দিতে ১৩তম বর্ষের মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ উৎসব আয়োজিত হচ্ছে। আয়োজক মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি। এই উৎসবে শামিল হয়েছে পাঁচজন বিদেশি সহ ১২০জন পর্যটকের একটি দল। মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য দেখে মুগ্ধ এই পর্যটকরা।


    হাজারদুয়ারি(বড়কুঠি) থেকে পাঁচ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে ৫০টির বেশি হেরিটেজ স্থান রয়েছে। আজিমগঞ্জ শহর লাগোয়া এলাকায় রয়েছে ১৪টি জৈন মন্দির। এসমস্ত জৈন মন্দির দেখতে গুজরাট, রাজস্থান থেকে হাজার হাজার পর্যটক আসেন। মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন হেরিটেজ স্থান বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হয়েছিলেন কলকাতার বাসিন্দা প্রদীপ চোপড়া। ২০১০সালে তিনি মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি গঠন করেন। প্রদীপবাবুই এই সংস্থার সভাপতি।


    তিনি বলেন, ১২ বছর বয়সে আমি এখানে মাসির বাড়িতে ঘুরতে এসেছিলাম। তখনই জেলার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান আমার মনে দাগ কেটেছিল। কিশোর মনেই স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিলাম যে, একদিন এই শহরের ঐতিহ্য বিশ্বের দরবারে তুলে ধরব। এখন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করছি। মুর্শিদাবাদের গুরুত্ব অনেকে ভুলতে বসেছিল। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে এই শহরকে বিশ্বের মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তোলাই আমার লক্ষ্য।


    ১৩তম বর্ষে পা দেওয়া মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ উৎসব তিনদিন ধরে চলবে। প্রদীপবাবু ১২০জনের পর্যটকদের দলটিকে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থান ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন। বড়নগরে ভাগীরথী নদীর তীরে ঐতিহাসিক স্থাপত্যের আদলে তৈরি হোটেল সেরোয়ালিতে ওই পর্যটকদের রাখা হয়েছে।


    পর্যটকদের এই দলে রয়েছেন লন্ডনের সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর সংযুক্তা ঘোষ। সংযুক্তাদেবী বলেন, মুর্শিদাবাদের মাটির সঙ্গে নবাবি আমলের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। ফলে ঘোরার জায়গা হিসেবে ইতিহাসপ্রেমীদের পছন্দের তালিকায় থাকে এই শহর। এখানে সর্বত্রই ইতিহাসের ছোঁয়া রয়েছে। খুব ভালো লাগছে।


    শুক্রবার হেরিটেজ উৎসবের প্রথমদিন পর্যটকদের মধ্যাহ্নভোজনের পর সুসজ্জিত নৌকায় গঙ্গাবক্ষে বিহার করানো হয়। তারপর শুরু হয় হেরিটেজ ওয়াক। রানি ভবানীর তৈরি চারবাংলা মন্দির সহ ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধীনে থাকা নানা হেরিটেজ স্থাপত্য পর্যটকদের দেখানো হয়েছে। সন্ধ্যায় পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ফ্যাশন শো আয়োজিত হয়। উৎসবের বাকি দিন হাজারদুয়ারি, কাঠগোলা বাগান, জগৎ শেঠের বাড়ি, নসিপুর রাজবাড়ি, কাটরা মসজিদ সহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখানো হবে। কলকাতা থেকে এই উৎসবে এসেছেন প্রিয়াঙ্কা জয়সওয়াল। তিনি বলেন, খুবই ভালো অভিজ্ঞতা হল। ফিরে গিয়ে সবার সঙ্গে শেয়ার করব। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)