• ভেঙে পড়ছে চাঙর, হীরাপুর স্কুলে তালা দিয়ে বিক্ষোভ অভিভাবকদের
    বর্তমান | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: ক্লাসরুমের বেহাল দশা। সিলিং থেকে ভেঙে পড়ে সিমেন্টের চাঙর। স্কুল সংস্কারের জন্য বহুবার আবেদন করেও কোনও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে শুক্রবার স্কুলে তালা দিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকরা। ঘটনাটি ঘটেছে হীরাপুর থানার বড়থোল অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এদিন অভিভাবকরা স্কুলের শিক্ষক, পড়ুয়াদের বের করে ক্লাসরুমে তালা লাগিয়ে দেন। তাঁদের দাবি, যতক্ষণ না ক্লাসরুম সংস্কারের কাজ শুরু হবে, ততক্ষণ স্কুলের তালা বন্ধ থাকবে। এরপরেই খুদে পড়ুয়ারা স্কুলের সামনে রাস্তায় বসে পড়ে। সেখানেই ব্যাগ থেকে বই খাতা বের করে পড়তে বসে প্রতীকী প্রতিবাদ জানায়। পরে পুলিস এসে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করে। শিক্ষকের অনুরোধে মিড ডে মিল খেয়ে বাড়ি ফেরে পড়ুয়ারা। পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রথীন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, ‘স্কুল সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় আবেদন আমরা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এখনও ফান্ড আসেনি। তবে দ্রুত তা আসবে বলে আশা করছি। আমরাও বিষয়টি নিয়ে তদ্বির করব। অভিভাবকদের অনুরোধ করব স্কুলে পঠন পাঠন যেন বন্ধ না করে দেন।’ হীরাপুর সার্কেলের অন্তর্গত বড়থোল অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আসানসোল পুরসভার ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডে। স্কুলে ৭২ জন পড়ুয়া রয়েছে। পঠনপাঠনের পাশাপাশি মিডডে মিলও হয়। সবই ঠিকঠিক চলছে। কিন্তু, বিপন্ন স্কুল বাড়িটাই। যা নিয়ে অভিভাবক মহলের রাতের ঘুম উবেছে। স্কুলে পাঠিয়ে তাঁদের উদ্বেগের প্রহর গুনতে হয়। এই বুঝি তাঁদের ছেলে বা মেয়ের মাথায় সিমেন্টের চাঙর ভেঙে পড়ল! দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলের পরিকাঠামোর বেহাল দশা। যা নিয়ে বার বার অভিভাবকরা সরব হয়েছেন। যদিও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এদিন অভিভাবকরা সকাল থেকেই স্কুল চত্বরে জমায়েত হন। শিক্ষকরা স্কুল বিল্ডিংয়ের তালা খুলতেই তাঁদের বের করে স্কুলে অন্য তালা ঝুলিয়ে দেন অভিভাবকরা। অভিভাবক বাপি ঘোষ বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষকদের এনিয়ে অভিযোগ করলে ওঁরা জানান, ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে। তাই এবার ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ এসে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করুক। না হলে স্কুল তালা বন্ধ থাকবে। প্রবল বিক্ষোভ চলতে থাকে।’ এরপর স্কুলের শিক্ষক অনুরোধ করেন যাতে পড়ুয়ারা মিড ডে মিল খেয়ে বাড়ি ফেরে। তাতে সম্মতি জানান অভিভাবকরা। স্কুলের সহশিক্ষক রামমোহন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘জেলা স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থাকায় সেখানে গিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। আমরা স্কুল সংস্কারের জন্য শিক্ষা দপ্তরে আর্জি জানিয়েছি।’ দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। পরে পুলিসের আশ্বাসে অভিভাবকরা  বাড়ি ফেরেন। অভিভাবক মধুমিতা ছেত্রী রীতা ওরাংরা বলেন, ‘স্কুল চলাকালীন যদি কোনও পড়ুয়ার কিছু হয়ে যায়,তাহলে তার কে দায় নেবে? দ্রুত সংস্কার না হলে বড়সড় আন্দোলন হবে।’-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)