• অনুষ্ঠানে ডেকে অপমান, বাঁকুড়ায় সংবর্ধনা না নিয়েই মঞ্চ ছাড়লেন মন্ত্রী জ্যোৎস্না
    বর্তমান | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মাণ্ডি ও প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার টানাপোড়েন চরমে উঠল। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান শ্যামলবাবু তাঁকে অনুষ্ঠানে ডেকে অপমান করেছেন বলে এদিন খাদ্য প্রতিমন্ত্রী বিষোদ্গার করেন। সংবর্ধনা না নিয়ে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মন্ত্রী নেমে যান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলা প্রশাসনের আধিকারিক ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি শ্যামল সাঁতরাও মন্ত্রীর মানভঞ্জনের চেষ্টা করেন। কিন্তু, কারও কথা না শুনে জ্যোৎস্নাদেবী অন্য একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চলে যান। এই ঘটনায় বাঁকুড়া স্টেডিয়ামে আয়োজিত কচিকাঁচাদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ঝলমলে অনুষ্ঠানে কার্যত ‘চোনা’ পড়ে যায়। 


    খাদ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিতে আমি কলকাতায় গিয়েছিলাম। সেখান থেকেই শ্যামলবাবুর সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়। আমি বার্ষিক ক্রীড়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার বিষয়টি তাঁকে নিশ্চিত করি। তাঁর কাছে অনুষ্ঠানের সময়ের বিষয়টি জানতে চাই। সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে অনুষ্ঠান হবে বলে শ্যামলবাবু আমাকে জানিয়েছিলেন। সেইমতো আমি সাড়ে ১০টার মধ্যে বাঁকুড়া স্টেডিয়ামে উপস্থিত হই। কিন্তু, ততক্ষণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যায়। এভাবে আমাকে ডেকে অপমান করার কোনও মানে হয় না। এর আগে কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে এভাবে আমি অপমানিত হইনি। আমি সব অনুষ্ঠানে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই হাজির হই। উপস্থিত সকলকে যথাযোগ্য সম্মানও দিই। কিন্তু আমাকে এদিন অপমান করায় খুবই খারাপ লেগেছে। সেই কারণে সংবর্ধনা জানাতে এলেও আমি তা গ্রহণ না করে মঞ্চ থেকে নেমে চলে আসি। এটা ব্যক্তিমানুষের কোনও বিষয় নয়। আমার চেয়ারকেও শ্যামলবাবুরা অপমান করেছেন। এটা দলেরও কোনও বিষয় নয়। সরকারিস্তরে বিষয়টি যেখানে জানানোর সেখানে জানাব।   


    শ্যামলবাবু বলেন, আমরা সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরুর কথা বলেছিলাম। সেইমতো ফোনে বিষয়টি মন্ত্রীকে জানাই। আমরা মন্ত্রীর জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষাও করেছিলাম। কিন্তু, দূর দূরান্ত থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে ১০টা নাগাদ খেলার সূচনা করা হয়। মন্ত্রী উপস্থিত হওয়ার পর তাঁকে সম্মান জ্ঞাপন করা হয়। কিন্তু, তিনি সংবর্ধনা নিতে অস্বীকার করে মঞ্চ থেকে নেমে যান। তবে এনিয়ে বিতর্ক চলুক, তা আমরা চাই না। 


    বাঁকুড়া স্টেডিয়ামে উপস্থিত জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী বলেন, কচিকাঁচা ছাত্রছাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা ঠিক হতো না। সেই কারণে উদ্যোক্তারা পূর্ব নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠান শুরু করেছেন। যথাযথ নিয়ম মেনেই মন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে। আমরা জনপ্রতিনিধি। আমরা মান-অভিমান করলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? মানুষের কাজ করতে গেলে এত মান-অভিমান করা যায় না।  
  • Link to this news (বর্তমান)