সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: দার্জিলিং বন বিভাগের মহানন্দা উত্তর রেঞ্জের ১০ মাইল এলাকায় দলছুট একটি স্ত্রী হস্তিশাবকের ঠাঁই হল জলদাপাড়া হলং সেন্ট্রাল পিলখানায়। বনদপ্তরের ধারণা, শাবকটির বয়স ২০ দিনের মতো। দার্জিলিং থেকে সড়কপথে গাড়িতে করে বৃহস্পতিবার রাতে জলদাপাড়ায় আনা হয়েছে একরত্তি হস্তিশাবকটিকে।
আপাতত হলং সেন্ট্রাল পিলখানায় শাবকটিকে একটি আইসোলেশন ওয়ার্ডে আলাদা করে রাখা হয়েছে। সংক্রমণ এড়াতেই শাবকটির জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রচণ্ড শীতে ঠান্ডায় যাতে কাবু না হয় তারজন্য ২৪ ঘণ্টা আগুন জ্বালিয়ে শাবকটিকে উষ্ণতার ছোঁয়া দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত শাবকটির শরীরের তাপমাত্রাও মেপে দেখছেন বন্যপ্রাণী চিকিৎসকরা।
পিলখানার নতুন অতিথি হস্তিশাবকটিকে গুঁড়ো দুধ জলে গুলিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে। বদহজম ও ডিহাইড্রেশন রুখতে গ্লুকোজও দেওয়া হচ্ছে। জলদাপাড়ার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ মাহুত রবি বিশ্বকর্মা শাবকটিকে নিজের সন্তানের মতো আগলে রেখেছেন।
উল্লেখ্য, ২ ফেব্রুয়ারি মহানন্দা উত্তর রেঞ্জের ১০ মাইলে দল থেকে আলাদা হয়ে যায় শাবকটি। বনকর্মীরা শাবকটিকে দলে ভিড়িয়ে দেওয়ার বহু চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মানুষের ছোঁয়া লাগায় মা হাতি শাবকটিকে আর ফিরিয়ে নেয়নি। ফলে অনাথ শাবকটি মায়ের দুধের অভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তাই বনদপ্তর আর ঝুঁকি নেয়নি। শাবকটিকে সরাসরি হলং সেন্ট্রাল পিলখানায় পাঠিয়ে দিয়েছে।
জলদাপাড়ার বন্যপ্রাণী চিকিৎসক উৎপল শর্মা বলেন, আপাতত শাবকটিকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। মাহুত রবি বিশ্বকর্মা বলেন, মা নেই। তাই একরত্তি শাবকটিকে চোখে চোখে রাখতে হচ্ছে। তবে দু’সপ্তাহ যাওয়ার পরেই নতুন জায়গায় মানিয়ে নেবে বলে মনে হচ্ছে অতিথি শাবকটি।
একটু মানিয়ে নেওয়ার পরেই শাবকটিকে খেলার সাথী দেওয়া হবে। সঙ্গী হিসেবে দেওয়া হবে পিলখানায় থাকা শাবক বীর, তিস্তারানি ও গজরাজকে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও প্রবীণ কাসোয়ান বলেন, হলং সেন্ট্রাল পিলখানায় দলছুট শাবকদের সুস্থতার হার বেশি। সেই জন্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জলদাপাড়ার পিলখানার উপর আস্থা রাখে।