• জেলা হাসপাতালে দৈনিক ভ্যাকসিন নেন ১৫০ জন, পথ কুকুর নির্বিজকরণের উদ্যোগ, সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান শুরু
    বর্তমান | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি শহরে বেওয়ারিস কুকুরের দৌরাত্ম্য অস্বাভাবিক। মাঝেমধ্যেই পথ কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন নাগরিকরা। রীতিমতো আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে শিলিগুড়িতে। শুধু পথকুকুর নয়, বেড়ালের কামড়েও অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, দৈনিক শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ১৫০ জন অ্যান্টির‌্যাবিস ভ্যাকসিন নিতে আসছেন। বিভিন্ন মহল এনিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন। অবশেষে টনক নড়েছে পুরসভা ও প্রশাসনের। ইতিমধ্যে বৈঠক করে পথ কুকুরদের নির্বিজকরণ ও ভ্যাকসিন প্রদান করা এবং নাগরিকদের সতেচন করার পরিকল্পনা নিয়েছে। কুকুর, বেড়াল কামড়ালে আক্রান্ত ব্যক্তি যাতে অবশ্যই অ্যান্টির‌্যাবিস ভ্যাকসিন সেব্যাপারে প্রচার চলছে। শুক্রবার এ ব্যাপারে শহরে ট্যাবলো বের করেছে জেলা প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তর।


    শহরে পথকুকুরের দৌরাত্ম্য ক্রমবর্ধমান। দিনে হোক কিংবা রাত, পথচারী দেখলেই ধেয়ে আসছে পথকুকুরের দল। কখনও তাড়া করছে, কখনও কামড়ে দিচ্ছে। বুধবার শহরের চম্পাসরিতে বেওয়ারিশ পথ কুকুরের কামড়ে তিনজন জখম হন। কয়েকদিন আগে মাটিগাড়ায় কুকুরের কামড়ে জখম হন বেসরকারি সংস্থার এক কর্মী। তাই অ্যান্টির‌্যাবিস ভ্যাকসিনের জন্য শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভিড় বাড়ছে। 


    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দৈনিক ভ্যাকসিনের জন্য ভিড় করেন ১৫০ জন। যারমধ্যে কুকুর ও বেড়ালের কামড়ে প্রথমবার আক্রান্তের সংখ্যাই প্রায় ৬০জন। জেলা হাপসতালের সুপার ডাঃ চন্দন ঘোষ বলেন, এখানে কুকুর ও বেড়ালের কামড়ে আক্রান্ত রোগীর চাপ মারাত্মক। এজন্য হাসপাতালে একটি কাউন্টার খুলতে হয়েছে। সেখানে একজন নার্স থাকছেন। তিনি আক্রান্তদের এআরভি দেন। রবিবার করে ইমার্জেন্সিতেও ভ্যাকসিন প্রদান অব্যাহত থাকছে। রোগীর চাপ থাকলেও আপাতত ভ্যাকসিনের আকাল নেই।


    কুকুরের উপদ্রব নিয়ে নাগরিকদের একাংশ ক্ষুব্ধ। তাঁরা বলেন, শহরের প্রতিটি পাড়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে কুকুর। সন্ধ্যার পর কোনও এলাকা দিয়ে হেঁটে, সাইকেলে ও বাইকে চলাচল করাই দায় হয়েছে। কুকুর পথচারীদের ঘিরে ধরছে। আঁচর ও কামড়ে দিচ্ছে। শহরবাসীর অভিযোগ, শহরে পথকুকুরের সংখ্যা ক্রমশ্য বাড়লেও প্রশাসনের নজর নেই।


    এই অবস্থায় পথকুকুর ও বেড়ালের দৌরাত্ম্য নিয়ে টনক নড়েছে প্রশাসনের। বুধবার বিষয়টি নিয়ে মহকুমা প্রশাসন বৈঠক করে। সেখানে পুরসভা, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, পথকুকুর ও বেড়ালকে অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন দেওয়া, কুকুর নির্বিজকরণ করা, জলাতঙ্ক রোধে মানুষকে সচেতন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য এদিন শহরে সেমিনার ও ট্যাবলো বের করে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তর। জেলা প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর তুফান পান বলেন, কুকুর নির্বিজকরণের পাশাপাশি যাঁরা কুকুর ও বেড়াল পুশছেন, তাঁদেরও ভ্যাকসিন নিতে বলা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)