গতি পেল খননকার্য, মানুষের সমস্যা সমাধানে বিশেষ ক্যাম্প
বর্তমান | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরদিন, লক্ষ্মীবারেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছিল মাটি খোঁড়ার কাজ। শুক্রবার থেকে সেই কাজ গতি পেল। এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ কোল ব্লক দেউচা-পাচামির চাঁদা মৌজায় একে একে জেসিবি, ডাম্পার নামিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ভূগর্ভস্থ কয়লার উপরিভাগে থাকা ব্যাসল্ট পাথর পর্যন্ত পৌঁছতেই এই খনন শুরু হয়েছে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এদিনই প্রায় ১৫ ফুট গভীর গর্ত খোঁড়া হয়েছে। পাশাপাশি দু’টি জায়গায় খনন কাজ চলে। বলাবাহুল্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় খনন কাজ চলছে। সেইসঙ্গে প্রকল্প এলাকার কিছু বাসিন্দাদের জমির নথি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে পৃথক চারটি ক্যাম্পও করা হয়েছে। এই ক্যাম্পগুলিও আগামীতেও চলবে। এদিকে খনন কাজের পরিদর্শনে পিডিসিএলের সিএমডি পি বি সেলিম, জেলাশাসক বিধান রায়, পুলিস সুপার আমনদীপ সহ জেলা পুলিস ও প্রশাসনের কর্তারা এদিন উপস্থিত ছিলেন। কাজের অগ্রগতি দেখে পুলিস ও প্রশাসনিক মহলের কর্তারা যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত। পিডিসিএলের সিএমডি জানিয়েছেন, এলাকার মানুষ চাইছেন বলেই ভালোভাবে কাজ শুরু করতে পেরেছি। এখানে খনি হলে স্থানীয়দেরই কাজে লাগানো হবে। গ্রামের লোকেদেরই কাজ দেওয়া হবে।
রাজ্য সরকারের এক পদস্থ কর্তা এদিন জানান, দেউচা পাচামির জন্য রাজ্য সরকার যে ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তা দেশের মধ্যে সেরা। আমরা জমিদাতাদের বিঘা প্রতি ১৩ লক্ষ টাকা, একজন করে সদস্যকে সরকারি চাকরি দিচ্ছি। তাছাড়া ভাগচাষি, পাট্টাদার, মজুরদেরও বঞ্চিত করা হচ্ছে না।
জেলাশাসক বলেন, সাধারণ মানুষের কাজ। সাধারণ মানুষ উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। আমরা পাশে আছি। পুলিস সুপার বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে কাজ চলছে। আগামীতে পিডিসিএলের সহযোগিতা নিয়ে ক্যাম্প গড়ে তোলার ভাবনা রয়েছে। জমির নথি সংক্রান্ত কাজের জন্য এদিন বহু মানুষ ক্যাম্পে গিয়েছিলেন।
বুধবার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই জেলার প্রশাসনিক মহলে তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার চাঁদা মৌজায় ১২ একর সরকারি জমির উপর প্রথমে ভূমিপুজো সম্পন্ন হয়। পরে রাতের দিকে প্রথম মাটি খোঁড়া শুরু হয়। ওইদিন জেলাশাসক, পুলিস সুপার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। পরে এদিন সিউড়িতে পিডিসিএলের সিএমডির উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে জেলাশাসক, পুলিস সুপার সহ এসআরডিএ চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল উপস্থিত ছিলেন। এরপর সকলেই মহম্মদবাজার বিডিও অফিসে পৌঁছন। পরে পিডিসিএলের সিএমডি, জেলাশাসক পুলিস সুপার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা চাঁদা মৌজায় পৌঁছন। তাঁরা প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন।
একদিকে এদিন যখন চাঁদা মৌজায় মাটি খোঁড়া চলছিল, তখনই মানুষের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের তরফে চারটি ক্যাম্প চালু হয়েছিল। চাঁদা, সাগরবাঁদি, গামারবাথান, মথুরাপাহাড়ীতে এই ক্যাম্পগুলি বসেছিল। সেখানে মূলত জমির নথি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের কাজ চলে। প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, সাধারণ মানুষের সমস্যা না মেটা পর্যন্ত এই ক্যাম্পগুলি চলবে।