এই সময়, পুরুলিয়া: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পুরুলিয়া জেলায় ব্যাপক সংখ্যায় কমলো পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। গত বছর পরীক্ষায় বসেছিল ৩৬ হাজার ৬৫৬ জন পরীক্ষার্থী। এ বার সেই সংখ্যাটা ১৯ হাজার ৪০৯। এ নিয়ে রীতিমতো রাজনীতি তরজা শুরু হয়েছে জেলা জুড়ে।
বিজেপি–র শহর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক তথা শিক্ষক জয়দীপ্ত চট্টরাজ বলেন, ‘পড়ার আগ্রহ কমে আসছে নতুন প্রজন্মের। কর্মসংস্থানে রাজ্য সরকারের কোনও উদ্যোগ নেই। তাই উচ্চশিক্ষায় কোনও লাভ নেই বলে মনে করছেন ছাত্রছাত্রীরা। কম বয়সেই লেখাপড়া ছেড়ে রোজগারের ব্যবস্থা করছে তরুণ প্রজন্ম।’
এ প্রসঙ্গে জেলা কংগ্রেস সেবাদলের সভাপতি তথা স্কুলশিক্ষক পার্থসারথি দাস বলেন, ‘মাধ্যমিক দেওয়ার পর উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে খুব বেশি আশা দেখতে পারছে না অনেকেই। তারা সোজাসুজি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে ভিন রাজ্য বা ভিন জেলায় গিয়ে। অনেকে আবার আইটিআইয়ের মতো কারিগরি শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরিতে যোগ দিচ্ছে।’
এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়ে জেলা তৃণমূল শিক্ষা সেলের আহ্বায়ক শিক্ষক বিকাশ মাহাতো বলেন, ‘কিছু না জেনেই এ নিয়ে রাজনীতি করছে বিরোধীরা। রাইট টু এডুকেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের বয়সভিত্তিক শ্রেণিতে ভর্তির নিয়ম করা হয়েছে। প্রি প্রাইমারিতে ভর্তি হতে গেলে পাঁচ বছরের বেশি বয়স হতে হবে। পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হতে গেলে ১০ বছরের বেশি বয়স হতে হবে। ২০১৩ সালে এই নিয়ম চালু হলে বয়সের কড়াকড়ির কারণে সে বছর যারা প্রি প্রাইমারিতে ভর্তি হয়েছে তার সংখ্যা অনেক কমে যায়। তার ফল এ বার দেখা যাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে। সে বার যারা প্রি প্রাইমারিতে ভর্তি হয়েছিল এ বছর তারাই উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে। একই ভাবে ২০২৩–এর মাধ্যমিকেও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক কম ছিল।’
এ বার পুরুলিয়ায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। ছাত্র রয়েছে ৯ হাজার ৬০০ জন। ছাত্রীর সংখ্যা ৯ হাজার ৮০৯। তবে এ বার জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অবশ্য বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ১,২৩৭ জন।
জেলায় এ বার মোট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৩ হাজার ১৬৪। ছাত্রের সংখ্যা ২০ হাজার ১৬০ জন , ছাত্রীর সংখ্যা ২৩ হাজার চার জন। এ দিকে, এ বার বাঁকুড়ায় মাধ্যমিক দিচ্ছে মোট ৪৮ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র রয়েছে ২১ হাজার ৯৪৫ জন। ছাত্রীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৫৩১। গত বছরের থেকে এ বছর জেলায় ২ হাজার ৩৯৩ জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।