এই সময়: সারদা, নারদ থেকে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি— গত কয়েক বছরে রাজ্যে একের পর এক আর্থিক অনিয়মের মামলায় বিচার প্রক্রিয়া এখনও কেন শুরু হচ্ছে না, তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বিভিন্ন সময়ে কলকাতা হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টেও এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। কিন্তু আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় বিচার আর পাঁচটা মামলার মতো বছরের পর বছর চলতে দিতে নারাজ হাইকোর্ট।
এই মামলার ট্রায়ালের জন্য সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। শুক্রবার সেই সময়সীমা ডিভিশন বেঞ্চ আরও চারদিন বাড়িয়ে দিল। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের নির্দেশ, আজ, শনিবার ও আগামিকাল, রবিবার এই মামলার পাঁচ অভিযুক্তের আইনজীবীরা নিজ়াম প্যালেসে সিবিআই অফিসে যাবেন।
সেখানে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া মামলা সংক্রান্ত নথিপত্রের সঙ্গে সিবিআইয়ের কাছে থাকা সব নথি মিলিয়ে দেখবেন আইনজীবীরা। তাঁদের পাতার নম্বর দেওয়া থেকে ইনডেক্স তৈরি— যা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অভিযুক্তদের, সেইসব সমস্যার সমাধান করতে হবে সিবিআইকে। নিজেদের যাবতীয় সংশয়–সন্দেহ সিবিআই অফিস থেকেই কাটিয়ে এই আইনজীবীরা আগামী সোমবার নিম্ন আদালতে তাঁদের বক্তব্য জানাবেন। মঙ্গলবার হাইকোর্টে এ নিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে তাঁদের।
এ দিন বিচারপতি বাগচির বক্তব্য, সিঙ্গল বেঞ্চে ট্রায়ালের জন্য সাতদিন সময় বেঁধে দিতে গিয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনা হয়নি, যা ন্যাচারাল জাস্টিসের পরিপন্থী। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘এই চারদিন সময় না বাড়ালে ট্রায়াল–জট আগামী ছ’মাস জারি থেকে বিচার পিছিয়ে যেত। কোনও ভাবেই এই মামলার বিচার পিছিয়ে যাক, তা চায় না হাইকোর্ট।’
এই মামলায় মোট পাঁচ অভিযুক্তের মধ্যে সন্দীপ ঘোষ, আশিস পান্ডে ও সুমন হাজরা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এ দিন হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, অন্য দুই অভিযুক্ত আফসার আলি খান ও বিপ্লব সিংকেও এই মামলায় যুক্ত করতে হবে। ট্রায়াল নিয়ে হাইকোর্ট যা নির্দেশ দেবে, তা পাঁচ অভিযুক্তের উপরেই গ্রাহ্য হবে। ওই দু’জন যদি যুক্ত না–হন, তা হলে ফের তাঁরা নতুন করে আপত্তি জানিয়ে মামলা করলে বিচার দীর্ঘায়িত হওয়ার সুযোগ থাকবে। তা করতে দিতে নারাজ হাইকোর্ট।