• জমি কেনাবেচার বিবাদে উস্তিতে গুলি, খুন ব্যবসায়ী
    এই সময় | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, উস্তি: ফের গুলিতে মৃত্যু দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। এ বার উস্তি থানার বাগারিয়া বাজারে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ নিজের অফিসে ঢোকার মুখে গুলিবিদ্ধ হন জমির ব্যবসায়ী বুদ্ধদেব হালদার (৫৫)। গুলিবিদ্ধ বুদ্ধদেবকে স্থানীয় নার্সিংহোম ও পরে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। জমি বেচা-কেনা নিয়ে বিরোধের জেরে এই খুন বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। ঘটনায় দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

    নিহতের বিরুদ্ধেও এলাকায় অসামাজিক কাজকর্ম চালানোর অভিযোগ ছিল। গত চার বছরে ছ’টি মামলা রয়েছে নিহত বুদ্ধদেবের বিরুদ্ধে। একাধিকবার তিনি জেলও খেটেছেন বলে দাবি পুলিশের। ডায়মন্ড হারবারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিতুন দে বলেন, ‘বুদ্ধদেব হালদার একাধিক দুষ্কর্মে জড়িত ছিল বলে জানতে পেরেছি। ওর সঙ্গীদের মধ্যে থেকেই কেউ খুন করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে।’

    নিহত বুদ্ধদেব হালদার স্থানীয় শ্রীচন্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের চকদেবুঘোষ গ্রামের বাসিন্দা। বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে বাগারিয়া বাজারে জমি কেনাবেচার জন্য একটি অফিস খুলেছিলেন তিনি। পাশাপাশি মাটির ব্যবসাও চালাতেন। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাগারিয়া বাজারের অফিসে এসেছিলেন বুদ্ধদেব। সঙ্গে বেশ কয়েকজন সঙ্গীও ছিল। স্থানীয়দের দাবি, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বাজারের দোকানে চা খেয়ে একটি গলির ভেতর দিয়ে অফিসে ঢোকার আগে অন্ধকার ওই গলির মধ্যে দুষ্কৃতীরা ঘিরে ধরে তাঁকে। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে বুদ্ধদেবের পেটে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। পেট ফুঁড়ে গুলি বেরিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বুদ্ধদেব। চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।

    আশপাশের লোকজন গুরুতর জখম অবস্থায় বুদ্ধদেবকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে নার্সিংহোমে পৌঁছন তাঁর পরিবারের লোকজন। বুদ্ধদেবের ভাইপো অসিত হালদার বলেন, ‘দু-তিনজন দুষ্কৃতী বাইকে চেপে এসেছিল। খুব কাছ থেকে কাকার পেটে গুলি করে। নার্সিংহোমে যখন পৌঁছই তখনও কাকার কিছুটা জ্ঞান ছিল। আমি জানতে চেয়েছিলাম কারা গুলি চালিয়েছিল। কাকা বলেছিল, সকলের মুখ ঢাকা ছিল। কাউকে চিনতে পারেনি।’

    বৃদ্ধা মা এবং স্ত্রীকে নিয়ে ছিল বুদ্ধদেবের সংসার। একমাত্র মেয়ের আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার সকালে কান্নায় ভেঙে পড়ে বুদ্ধদেবের বৃদ্ধা মা শঙ্করী হালদার বলেন, ‘জমিজমা নিয়ে কারও সঙ্গে কিছু একটা ঝামেলা হয়েছে। তা না হলে ছেলেকে গুলি করে খুন করবে কেন?’ নিহতের এক আত্মীয় সুমনা হালদার বলেন, ‘জমি কেনাবেচা এবং মাটির ব্যবসা নিয়ে মাঝখানেক আগে থেকে একটা গন্ডগোল চলছিল ওদের মধ্যে। মনে হয় সেই ঝামেলা থেকেই ওর কাছের লোকজনরাই এ ভাবে খুন করল।’

  • Link to this news (এই সময়)