ডানকুনিতে গুলিকাণ্ডে মৃতের ভায়রাভাইকে আটক করল পুলিশ। অভিযোগ, কিছু দিন আগেই বান্টি সাউ নামে ডানকুনি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বন্দেরবিলের বাসিন্দাকে খুনের হুমকি দেন ভায়রাভাই বিকাশ ওরফে পিন্টু সাউ। তার পরেই শনিবার দিল্লি রোডে গুলিবিদ্ধ হন পে-লোডার চালক। অন্য দিকে, মৃতের বাবার দাবি, ছেলের খুনের নেপথ্যে বৌমার পরকীয়া সম্পর্কের ‘প্রভাব’ আছে। সমস্ত পক্ষের অভিযোগ এবং দাবি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
জানা গিয়েছে, বান্টির সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক ভাল ছিল না। বেশ কিছু দিন ধরে তাঁরা আলাদা থাকছিলেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন বান্টি। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাইক নিয়ে ডানকুনি মোল্লাবেড় থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। দিল্লি রোড চৌমাথার কাছে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে আততায়ী। গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান বান্টি। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকদের সূত্রে খবর, বুকে গুলি লেগেছিল ৩৫ বছরের যুবকের।
বান্টির বাবা রাজকুমার সাউ বলেছিলেন, ছেলের সঙ্গে কারও শত্রুতা রয়েছে, এমনটা তাঁর জানা নেই। তবে পরে তিনি জানিয়েছেন, ছেলের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন বৌমা। বছর চারেক আগে ছেলের বিয়ে দিয়েছিলেন। তবে বেশ কিছু দিন ধরে ছেলে এবং বৌমা আলাদা থাকেন। রাজকুমার বলেন, ‘‘দু’বছর ধরে অশান্তি চলছিল ছেলে-বৌমার। ওদের মধ্যে বনিবনা ছিল না।’’ তার পরেই বান্টির বাবা অভিযোগ করেন, বৌমার অন্য যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। সে কারণে ছেলে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়েছিলেন। কিন্তু বৌমা রাজি হননি। ওই বিষয়ে নাকি হস্তক্ষেপ করেছিলেন বান্টির ভায়রাভাই পিন্টু। এক সময়ে তিনি বান্টিকে প্রাণে মারার হুমকি দেন।
ডানকুনিতে গুলিকাণ্ডে রাজনৈতিক শোরগোলের মধ্যে এক জনকে পুলিশ আটক করার পর উত্তেজনা থিতিয়েছে খানিকটা। পুলিশ সূত্রের খবর, পিন্টুর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার আগরপাড়ার তেঁতুলতলা এলাকায়। পিন্টুর স্ত্রী সঙ্গীতা সাউ জানান, শনিবার ভোর ৪টের দিকে পুলিশ বাড়ি থেকে তাঁর স্বামীকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। তাঁর দাবি, পিন্টু শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতেই ছিলেন। মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। সঙ্গীতা বান্টির স্ত্রীর মাসতুতো বোন।
পুলিশ মনে করছে, পারিবারিক কারণে খুন হয়েছেন বান্টি। তাঁকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করা হয়েছিল, না কি আত্মীয়দের কেউ খুনে সরাসরি জড়িত, তা তদন্তসাপেক্ষ।