বিস্ফোরণে জখম, ৭ ঘণ্টা চোর-পুলিশ খেলার পর কোন কৌশলে গ্রেপ্তার কল্যাণীর বাজি কারখানার মালিক খোকন?
প্রতিদিন | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সুবীর দাস, কল্যাণী: চোখের সামনেই বিস্ফোরণ। ছটফট করছেন কর্মীরা। জখম হয় নিজেও। তবে তা সত্ত্বেও কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করেনি। পরিবর্তে নিজে গা ঢাকা দিয়েছিল। বারবার বদলাচ্ছিল মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন। এক সময় মোবাইল সুইচড অফও করে দেয়। তাতেও হল না শেষরক্ষা। ঘণ্টাসাতেকের চোর-পুলিশ খেলার পর গ্রেপ্তার কল্যাণীর খোকন বিশ্বাস। শনিবার তাকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে। তারপর থেকে খোঁজ শুরু হয় খোকনের। তবে কোথাও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে মোবাইল টাওয়ার লোকেশনে নজর রাখে পুলিশ। প্রথমে দেখা যায় খোকন কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের আশেপাশে রয়েছে। পরে দেখা যায় নৈহাটির দিকে যাচ্ছে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে ফোন সুইচড অফ হয়ে যায়। তবে ইতিমধ্যেই তদন্তকারীরা খোকনের বন্ধুবান্ধবদের জিজ্ঞাসাবাদও শুরু করে। সেই সূত্রে আরও তথ্য পান তদন্তকারীরা। সেই মতো হানা দিয়ে গ্রেপ্তার হয় খোকন। তাকে শনিবার আদালতে তোলা হয়। সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
এই ঘটনার পর থেকে থমথমে কল্যাণী। বিস্ফোরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাধিক প্রশ্নের জট। আদৌ এই কারখানার বৈধ অনুমতি ছিল? যদি অনুমতি থাকে সেক্ষেত্রে ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বাজি কারখানার অনুমতি কে দিয়েছিল? আর যদি বেআইনি হয় সেক্ষেত্রে কেন সকলের নজর এড়িয়ে গেল বাজি কারখানা? এই ঘটনার সঙ্গে কি কোনও প্রভাবশালীর যোগসাজশ রয়েছে? এমনই নানা প্রশ্নের জবাব খুঁজছে পুলিশ। খোকনকে জেরা করে সেসব তথ্য পাওয়া যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিকে, শনিবার সকালে খোকনের বাড়িতে যায় পুলিশ। ছাদ থেকে প্রচুর পরিমাণ বাজি তৈরির সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়। এদিন ঘটনাস্থলে যায় তিন সদস্যের ফরেন্সিক টিম। নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে।