বেহালায় একই জমির দুই ঠিকানা! আইন ভাঙার অভিযোগে অগ্নিশর্মা মেয়র, তদন্তের নির্দেশ
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বেহালার ডায়মন্ড হারবার রোড সংলগ্ন এলাকায় ১০ কাঠার একটি জমি। অবিভক্ত একক একটি সম্পত্তি। অথচ, সেই জমি থেকেই প্রায় ২ কাঠা একটি অংশের ঠিকানা আলাদা! যেখানে মূল জমির ঠিকানা - ৫৮ নম্বর ডায়মন্ড হারবার রোড, সেখানে ওই জমিরই সংশ্লিষ্ট ২ কাঠা অংশের ঠিকানা ৫৮এ ডায়মন্ড হারবার রোড! এটা কীভাবে সম্ভব হল? বিষয়টি কি আদৌ আইনসম্মত?
'টক টু মেয়র' ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফোন করে সরাসরি কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে এই প্রশ্নই করেছিলেন এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, অসাধু উপায়ে ওই ১০ কাঠা জমি থেকে ২ কাঠা আলাদা করে দেওয়া হয়েছে! শুধু তাই নয়। গোপনে সেই ২ কাঠা অংশের আলাদা করে মিউটেশন করা হয়েছে এবং তার জেরে শুধু ওই অংশটুকুর জন্যই পৃথক সম্পত্তি কর আরোপ করা হয়েছে!
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে এই ঘটনা জানার পরই তাজ্জব হয়ে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি সঙ্গে সঙ্গে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে, এমন ঘটনা যদি সত্যিই ঘটে থাকে, তাহলে তা অত্যন্ত অনভিপ্রেত বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র।
কলকাতা পুরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনাটি পুরকমিশনার ধবল জৈনকে সরাসরি দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। পুরকমিশনারকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গোটা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। এবং যদি দেখা যায়, কোনও বেআইনি কাজ হয়েছে ও তার সঙ্গে পুরনিগমেরই কোনও কর্মী বা আধিকারিক জড়িয়ে রয়েছেন, তাহলে সেই ব্যক্তিকে কোনও মতেই রেয়াত করা চলবে না। এমনকী, যদি সেই দোষী ব্যক্তি ইতিমধ্যে অবসরও নিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর পেনশন বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এদিকে, এই ঘটনা জানাজানি হতেই আবারও একবার কলকাতা পুরনিগমের কর্মী থেকে শুরু করে শীর্ষ আধিকারিকরা পর্যন্ত প্রশ্নের মুখে পড়তে শুরু করেছেন। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি কলকাতা পুরনিগমের অন্দরেই কোনও অসাধু চক্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে - যারা এইসব বেআইনি কাজকর্ম করে যাচ্ছে? সূত্রের দাবি, মেয়র এই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন পুরকমিশনারকে।
নিয়ম বলছে - একটি বড় সম্পত্তিকে অবশ্যই ছোট ছোট সম্পত্তিতে ভাঙা যায়। কিন্তু, তার জন্য নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। সেই আইন অনুসারে পদক্ষেপ না করা হলে একই সম্পত্তির জন্য পৃথক অ্যাসেসমেন্ট, মিউটেশন বা সম্পত্তি কর আরোপ করা যায় না। সেটা করা হলে, তা বেআইনি বলে গণ্য করা হবে।
এখন ঘটনা হল, এই ধরনের বেআইনি কাজ আটকানোর জন্য পুরনিগমের নিজস্ব নজরদারি ব্যবস্থাপনা রয়েছে। তাহলে সেই নজরদারি এড়িয়ে কীভাবে বেহালার এই ঘটনা ঘটল? কেন একজন নাগরিককে ফোন করে এই বিষয়ে অভিযোগ জানাতে হল মেয়রকে?