সোমবার থেকে শুরু মাধ্যমিক পরীক্ষা। ঠিক তার দু’দিন আগে শনিবার অস্বাভাবিক মৃত্যু হলো এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ঝুলন্ত দেহ। মেদিনীপুরের ডেবরার ঘটনা। মৃত ওই ছাত্রীর নাম অনন্যা দাস (১৬)। পরিবার সূত্রে খবর, এ দিন সকালে ভাইয়ের সঙ্গে বাজারেও গিয়েছিল ডেবরার ভোগপুরের অনন্যা। এর পর বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির তিন তলার একটি ঘরে অনন্যাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় তার ভাই। সে-ই সবাইকে ডেকে আনে। উদ্ধার করে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় বালিচক গ্রামীণ হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। অনন্যাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আত্মঘাতীই হয়েছে ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। জেলা পুলিশ জানিয়েছে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পেলে আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
বালিচক গার্লস হাইস্কুল থেকে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল অনন্যার। সে পড়াশোনায় যথেষ্ট ভালো বলেই জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষিকারা। বালিচক গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইলোরা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ও আমাদের খুব প্রিয় ছাত্রী ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি খুব ভালো নাচও করত অনন্যা। ওকে এ ভাবে হারানোর কথা ভাবতেই পারছি না।’
পরিবার সূত্রে খবর, মাস খানেক আগে অনন্যার অ্যাপেনডিক্স অপারেশন হয়। এর পর থেকেই তার মনে হতো, এই ডাক্তার, অপারেশনের কারণে তার পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে। এ নিয়ে কোনও আশঙ্কা কাজ করতে পারে বলেও মনে করছেন পরিবারের লোকজন। ছাত্রীর মৃত্যুসংবাদ পেয়ে কেঁদে ফেলেন তাঁর স্কুলের বড় দিদিমণি। ধরা গলায় ইলোরা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মনে হচ্ছে আমরাও ব্যর্থ। এইটুকু ফুলের মতো একটা মেয়ে, এমন চিন্তা ওর মনে কী ভাবে এলো? আমাদের সমাজ কোন পথে যাচ্ছে? এ দায় তো আমাদের সকলের।’