নিজস্ব প্রতিনিধি, শক্তিগড়: মাঠে সবে আলু উঠতে শুরু করেছে। এখনই দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। তাঁরা মাঠেই সাড়ে ছয় থেকে সাত টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছেন। লাভ দূর অস্ত, উৎপাদন-খরচ তুলতেই চাষিদের কালঘাম ছুটছে। পুরোদমে আলু উঠতে শুরু হলে দাম কী দাঁড়াবে, সেই চিন্তায় চাষিদের ঘুম উবে গিয়েছে।
চাষিরা জানালেন, এবছর আবহাওয়া অনুকূল ছিল। আলুর ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পোখরাজ আলু উঠছে। আর কয়েকদিনের মধ্যে জ্যোতি আলু উঠতে শুরু করবে। অন্যবছর মরশুমের শুরুতে ভালো দাম পাওয়া যায়। পরে তা কিছুটা কমে। কিন্তু, এবার চাষিরা কেজি প্রতি ১০টাকাও আলুর দাম পাচ্ছেন না।
শক্তিগড়ের আলুচাষি আহমেদ আলি মণ্ডল বলেন, এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে ৩০হাজারের বেশি টাকা খরচ হয়। এবছর বিঘা প্রতি ৮০-৯০বস্তা আলু উৎপাদন হচ্ছে। আলুর ফলন বাড়লেও আমাদের লাভ হচ্ছে না। মাঠে এক প্যাকেট পোখরাজ আলু বিক্রি করে ৩২০-৩৫০টাকা পাওয়া যাচ্ছে। অথচ বাজারে দ্বিগুণ দামে আলু বিক্রি হচ্ছে। ফড়েরা লাভ করছে। অপর এক চাষি বসির শেখ বলেন, সারের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বীজের দামও বেড়ে গিয়েছে। দাম না পেলে চাষিদের পথে বসতে হবে। গতবছর বৃষ্টির জন্য আলু চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আলু বিক্রি করে চাষিরা লাভের মুখ দেখতে পারেননি। বিমার টাকা পাওয়ার পর তাঁদের মুখে হাসি ফোটে। কিন্তু, এবার ফলন বেশি হচ্ছে। কিন্তু, দাম উঠছে না। সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত। কৃষিদপ্তর জানিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় জ্যোতি আলুর চাষ বেশি হয়। কিছু এলাকায় হিমালিনী, চন্দ্রমুখী, কলম্বিয়ার মতো প্রজাতির আলু চাষ হচ্ছে। শক্তিগড় ও কাটোয়ার কয়েকটি এলাকায় পোখরাজ আলু চাষ হয়। অন্যবছর ৫০কেজি পোখরাজ আলুর বস্তা ৫০০-৫৫০টাকায় বিক্রি হতো। এবছর উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাবেও আলুর উৎপাদন ভালো হয়েছে। ভিনরাজ্যের আলু বাজারে এলে দাম আরও কমবে বলে চাষিদের আশঙ্কা।