চারদিনের কর্মবিরতি প্রত্যাহার, কাজে ফিরলেন সাফাইকর্মীরা
বর্তমান | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: অবশেষে চারদিনের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেন রায়গঞ্জ পুরসভার সাফাইকর্মীরা। শুক্রবার কার্যত কাকভোরে পুর কর্তৃপক্ষ ও রায়গঞ্জের বিধায়কের সঙ্গে আন্দোলনরত কর্মীদের বৈঠক শেষে সাময়িকভাবে কাটল জট। শহরজুড়ে জমে থাকা জঞ্জাল নিষ্কাশনের কাজে এদিনই ফিরলেন সাফাইকর্মীরা। কিন্তু জট কাটলেও আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বকেয়া বেতন সমস্যা না মিটলে আবার কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাফাইকর্মীরা। কারণ দুই বছর ধরেই মাঝেমধ্যে বেতন বকেয়া থেকে যাচ্ছে। তাতেই অসন্তোষ। এতে আগামীতে আবারও শহরে জঞ্জালের স্তুপ জমার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তবে পুর কর্তৃপক্ষ ও বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর আশ্বাসে কাজে ফিরেছেন পুর সাফাইকর্মীরা।
গত চারদিন ধরে পাঁচ শতাধিক পুর কর্মী বকেয়া বেতন মেটানোর দাবি নিয়ে কর্মবিরতি চালাচ্ছিলেন। ফলে শহরের মোহনবাটি বাজার, মিলন পল্লি, দেবীনগর, স্টেশন বাজার, স্টেশন রোড, পুর বাসস্ট্যান্ড, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সহ শহরের প্রায় সব ওয়ার্ড দুর্গন্ধময় হয়ে পড়ে। জঞ্জালের স্তূপে ঢেকে যায় পুরসভার ভ্যাট ও ময়লা তোলার গাড়িগুলি। ক্ষোভ ছড়ায় পুরবাসীর মধ্যে। এই অবস্থায় পুর কর্মীদের বোঝানোর চেষ্টা শুরু করে পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু একাধিকবার সেই চেষ্টা বিফলে যায়। বকেয়া বেতন মেটানোর দাবিতে কর্মবিরতির পক্ষেই অনড় ছিলেন সাফাইকর্মীরা। শেষে এদিন কার্যত সাতসকালেই পুরভবনে ছুটে আসেন রায়গঞ্জের বিধায়ক। আসেন পুরসভার প্রশাসক সন্দীপ বিশ্বাস ও অন্যান্য পুর আধিকারিক ও পুর কো-অর্ডিনেটররা। সেসময়ও এদিন পুরসভার গেটের সামনে সাফাইকর্মীরা জমায়েত করেন। শেষে তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসে পুর কর্তৃপক্ষ। তারপরই জট কাটে। পুরপ্রশাসক সন্দীপ বলেন, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জানুয়ারি মাসের বেতন দেওয়া হবে সাফাইকর্মীদের। এই আশ্বাসেই শেষ পর্যন্ত সাফাইকর্মীরা কাজে ফিরলেন। বহু জায়গায় জঞ্জাল সরানোর কাজ শুরু করেন তাঁরা। পাশাপাশি আমরা সাফাইকর্মীদের বেতন সমস্যা মেটাতে সরকারের কাছেও দৃষ্টি আকর্ষণ করব। বিধায়ক বলেন, আমাদের তরফে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, কাজ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি চলবে না। সাধারণ মানুষের পরিষেবা চালু রেখে যা করার করতে হবে। কোথাও অসঙ্গতি থাকলে আলোচনা হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বকেয়া বেতন মেটানো হবে। আর এই আশ্বাসেও সাফাইকর্মীরা কাজে ফিরেছেন।
আন্দোলনরত সাফাইকর্মীদের তরফে শম্ভু ঘোষ বলেন, বকেয়া বেতন মেটানোর দাবিতে বাধ্য হয়েই কর্মবিরতি নেমেছিল সাড়ে চারশো সাফাইকর্মী। কারণ দু’বছর যাবৎ মাঝে মধ্যেই বেতন বকেয়া রাখছে পুরসভা। এবার পুর কর্তৃপক্ষ ও বিধায়ক নিজেই আশ্বাস দিয়েছেন। তার ভিত্তিতেই এদিন সকলে কাজে ফিরছেন। তবে যতক্ষণ না বকেয়া মিটছে, ততক্ষণ কর্মীদের ক্ষোভ থাকবেই। এদিন বকেয়া পেনশন নিয়েও পেনশন প্রাপকদের সঙ্গে বৈঠক করে পুর কর্তৃপক্ষ। পুর প্রশাসক জানিয়েছেন, আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বকেয়া পেনশন মেটানো হবে। নিজস্ব চিত্র