বিধানসভার অধিবেশনে ‘নীরব’ দলীয় বিধায়কদের তালিকা তৈরি করছে তৃণমূল
বর্তমান | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
রাহুল চক্রবর্তী, কলকাতা: বিধানসভায় বিল, প্রস্তাব পেশ হোক বা কোনও বিষয়ে আলোচনা, গলা শোনা যায় নির্দিষ্ট কয়েকজন তৃণমূল বিধায়কের। অথচ সরকারিভাবে তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ২২১। তাঁদের মধ্যে শতাধিক তৃণমূল বিধায়ককে গত এক বছরে একদিনের জন্যও মুখ খুলতে দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতি বদল করতে বছরের প্রথম অধিবেশন থেকেই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করছে তৃণমূল পরিষদীয় দল। সূত্রের খবর, গত বছর একদিনের জন্যও অধিবেশনে বক্তব্য রাখেননি, এমন বিধায়কদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
গত বছর মোট ৪০ দিন বিধানসভার অধিবেশন হয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে, তৃণমূলের শতাধিক বিধায়কের পারফরম্যান্স খুব খারাপ। বিধানসভা বিধায়কদেরই বলার জায়গা। অথচ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম দেখা দিয়েছে ওই তৃণমূল বিধায়কদের। তাঁরা এসেছেন, বিধানসভার হাজিরা খাতায় সই করে চলে গিয়েছেন। একদিনের জন্যও মুখ খোলেননি কোনও বিষয়ে। কিন্তু পরিষদীয় দলের বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন, বিধায়করা বিধানসভায় এসে সই করে চলে গেলে হবে না। অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখতে হবে। প্রতিদিন উপস্থিত থাকতে হবে অধিবেশনে।
বিধায়কদের এই ‘আসি-যাই, ভাতা পাই’ সংস্কৃতিই এবার ভাঙতে তৎপর হয়েছে তৃণমূলের পরিষদীয় দল। কয়েকদিনের মধ্যেই বাজেট অধিবেশন। রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। তারপর বাজেট পেশ হবে। রাজ্যপালের ভাষণ ও রাজ্য বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে পরবর্তী কয়েকদিন। সবক’টি ক্ষেত্রেই দলীয় বিধায়কদের বেশি মাত্রায় অংশগ্রহণ এবং বক্তব্য পেশ নিশ্চিত করতে চাইছে তৃণমূল পরিষদীয় দল। গত বছর একদিনও মুখ না খোলা যে ১০০ বিধায়কদের নাম তালিকায় রয়েছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন পরিষদীয় দলের নেতৃত্ব। নতুনরা যাতে বক্তব্য রাখেন এবং বিধানসভার রীতিনীতি শিখে নেন, সেদিকেও নজর দিচ্ছে তৃণমূল। গত বছর অধিবেশনে ভালো পারফরম্যান্স ছিল তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব সরকার, রানা চট্টোপাধ্যায়, মহম্মদ আলি, দেবব্রত মজুমদার, সমীর জানা, সুকান্ত পাল, শ্যামল মণ্ডল, রফিকুর রহমান, ইটাহারের মোশারফ হোসেন প্রমুখ বিধায়কের। প্রয়োজনে তাঁদের দৃষ্টান্ত সামনে রাখা হবে।