শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হারাকাত আল-মুকোয়ামা-আল-ইসলামিয়া সংক্ষেপে ‘হামাস’। ইজরায়েল সেনার সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া এহেন হামাসকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে কলকাতাকে টার্গেট করেছে পাক আইএসআই। গোয়েন্দাদের হাতে এই তথ্য আসার পরই এর মোকাবিলায় রাজ্যে তৈরি হল স্বয়ংসম্পূর্ণ এক এলিট ফোর্স। ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি) প্রশিক্ষিত কমান্ডোদের নিয়ে তৈরি এই ‘হিট স্কোয়াড’ যে কোনও ধরনের নাশকতা ঠেকাতে এবং অ্যান্টি টেররিস্ট অপারেশনে অত্যন্ত দক্ষ। অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র, গ্রেনেড সহ নানা ‘গিয়ার’এ সজ্জিত স্কোয়াডের সদস্যরা। ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত এই স্কোয়াডের সদস্যরা যাতে আপদকালে রাজ্যের যে কোনও জায়গায় উড়ে যেতে পারে, তারজন্য হেলিকপ্টারও তৈরি রাখা হচ্ছে বলে খবর।
হাসিনা সরকারের পতনের পরই ইসলামবাদ বাংলাদেশের মহম্মদ ইউনুস সরকারের দিকে ‘সাহায্যের’ হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। পাক গুপ্তচর সংস্থার চিফ লেফট্যান্ট জেনারেল আসিম মালিক কয়েকসপ্তাহ আগেই বাংলাদেশে ঘুরে গিয়েছেন। আইএসআইয়ের পদস্থ আধিকারিকরা ঘাঁটি গেড়েছেন সীমান্তের ওপারে। গোয়েন্দাদের চিন্তা বাড়িয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থার হাত ধরে হামাসের দুই শীর্ষ নেতা সম্প্রতি বাংলাদেশে পা রাখায়। সে দেশের সেনার শীর্ষ কর্তা এবং আইএসআই আধিকারিকদের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক করেছেন বলে খবর। প্রতিবেশী রাষ্ট্রে হামাসের উপস্থিতির পরই বাড়তি সতর্ক হতে হচ্ছে ভারতকে। এরই পাশাপাশি পাক অধিকৃত কাশ্মীরের রাওয়ালকোটে গত ৫ ফেব্রুয়ারি লস্কর ও জয়েশের মতো ভারত বিরোধী জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে একযোগে সভা করেছে হামাস।
গোয়েন্দাদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, হামাসকে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেই আইএসআই সীমান্তের ওপারে ঘাঁটি গাড়তে দিয়েছে। বাংলাদেশ সেনা প্রযুক্তিগত দিক থেকে ততটা উন্নত নয়। তাদের হাতে যে ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, তার মান অত্যন্ত খারাপ। সর্বোপরি গেরিলায় কায়দায় কীভাবে লড়াই চালাতে হয়, তা নিয়েও বাংলাদেশি সেনার প্রশিক্ষণ মান্ধাতার আমলের। গোয়েন্দারা জেনেছেন, বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারতের ডিফেন্সের সিস্টেমে ঢুকে আইএসআই জানতে চাইছে, ঠিক কী কী ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে দিল্লির হাতে। একইসঙ্গে সঙ্গে তাদের লক্ষ্য আর্টিলারি বাহিনীও। ডিফেন্স সিস্টেমকে ‘ব্রেক’ করা এবং যে কোনও ধরনের ক্ষেণণাস্ত্র ভোঁতা করতে হামাসের দক্ষতা প্রশ্নাতীত। পরিকল্পনা হয়েছে, ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রকে অকেজো করে দেওয়া কৌশল হামাসের কাছে শিখবে বাংলাদেশ সেনা। ভারতীয় ডিফেন্স সিস্টেম হ্যাক করে সেগুলিকে তছনছ করার টার্গেট নিয়েছে পাক ও বাংলাদেশ গুপ্তচর সংস্থা। পাশাপাশি ঠিক হয়েছে, হামাসের কাছ থেকে গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেবে পদ্মাপারের সেনা।
গোয়েন্দারা বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পারছেন, সীমান্তের অরক্ষিত বিভিন্ন অংশ দিয়ে এ বাংলায় ঢোকার পরিকল্পনা করেছে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। সহজে হামলা চালিয়ে আলোড়ন ফেলে দেওয়া যাবে বলে কলকাতাকে টার্গেট করেছে আইএসআইয়ের কর্তারা। সেক্ষেত্রে তাদের লক্ষ্য হলো অর্তকিতে হানা দিয়ে ভিভিআইপি সহ সাধারণ মানুষকে পণবন্দি করা। এরপর নানা শর্ত চাপিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা। প্রয়োজনে পণবন্দিদের হত্যার পরিকল্পনাও রয়েছে। এমনকী বিমান হানার মাধ্যমে বড়সড় নাশকতার পরিকল্পনা রয়েছে কি না, সেটাও জানার চেষ্টা চলছে। গোয়েন্দাদের কাছে এই তথ্য পাওয়ার পরই তিনটি ‘ঘাতক দস্তক’ তৈরি করেছে রাজ্য। প্রতি দস্তকে থাকবে ছ’জন করে সদস্য। এলিট ফোর্সের এই কমান্ডোদের হাতে থাকছে জার্মানিতে তৈরি স্বয়ংক্রিয় এমপি ৫ সাব মেশিনগান। ।