নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জাল ডাক্তার, জাল পুলিস, জাল সিবিআই অফিসারের পর এবার জাল ফোটোগ্রাফার চক্র ফাঁস করল কলকাতা পুলিস। নামী ফোটোগ্রাফারের নাম ভাঁড়িয়ে একাধিক হোটেলে নগ্ন ফোটো শ্যুট ও মডেলদের গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। বিষয়টি প্রকৃত চিত্রগ্রাহকের কানে যায়। যাদবপুর থানায় তাঁর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জাল চিত্রগ্রাহককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতের নাম প্রতীক পাল (৩৭)। বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের টিটাগড়ের নোনাচন্দনপুকুর বাজার এলাকার বাসিন্দা সে। ঘটনায় অভিযুক্ত আরও এক যুবক ফেরার। তার নাম তপন পাল ওরফে অনিকেত বসু। পলাতকের সন্ধান চালাচ্ছে পুলিস।
লালবাজার সূত্রে খবর, যাদবপুরের বাসিন্দা তথাগত ঘোষ। তাঁর নামী ফোটোগ্রাফি এজেন্সি রয়েছে। তিনি পুলিসকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন, তাঁর ফোটোগ্রাফি এজেন্সির নাম করে জাল চক্র খুলে বসেছে দুই যুবক। শুধু তাই নয়, ফোটোগ্রাফির নাম করে অশ্লীল ভিডিও শ্যুটের পাশাপাশি উঠতি মডেলদের ধর্ষণ করছে অভিযুক্তরা। এরপরেই বিষয়টি নিয়ে নিজেই খোঁজখবর করেন যাদবপুরের ওই ফোটোগ্রাফার। থানায় অভিযোগও করেন। তদন্তে নেমে দুই তরুণী মডেলের খোঁজ পায় পুলিস। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হয় পুলিসের কাছে। তথাগত ঘোষ সেজে তরুণীদের মডেলিংয়ে কাজের সুযোগ করিয়ে দেওয়ার টোপ দিত প্রতীক ও তপন। নামী ফোটোগ্রাফি সংস্থার ছবিও দেখানো হয় তাঁদের। তাতেই টোপ গিলে নেন দুই উঠতি মডেল। এরপরেই কলকাতা সহ জেলার বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। নগ্ন শ্যুটের পাশাপাশি প্রতীক ও তপন বার বার তাঁদের ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।
তদন্তে নেমে শুক্রবার গভীর রাতে টিটাগড়ে অভিযান চালায় যাদবপুর থানার পুলিস। প্রতীকের বাড়ি থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। লালবাজার সূত্রের খবর, জেরায় ধৃত জানিয়েছে, বারাকপুরে প্রতীক ও তপনের এক বন্ধু থাকেন। তিনি পেশায় চিত্রগ্রাহক। মডেলিংয়ের ফোটোশ্যুট করান ওই যুবক। সেই যুবকের কাছে কর্মরত ও উঠতি মডেলদের ফোন নম্বর জোগাড় করে দুই অভিযুক্ত। প্রায় ২০ জনের ফোন নম্বর নিয়ে নেয় তারা। এরপরেই একে একে ফোন করে মডেলদের। পুলিস সূত্রের দাবি, দুই তরুণী মডেল ছাড়া আরও ৪-৫ জন উঠতি মডেল দুই অভিযুক্তের ‘শিকার’। মুম্বইয়ের প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেওয়ার নাম করে ধর্ষণ করা হয় তরুণীদের। পুলিসকে ধৃত জানিয়েছে, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে জাল ফোটোগ্রাফির চক্র চালাচ্ছিল দুই অভিযুক্ত। এদিন ধৃত যুবক প্রতীককে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।