• বাড়তি রোজগারের আশা, বারুদের স্তূপেই কাজ করছেন দুঃস্থ মহিলারা
    বর্তমান | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কল্যাণী: বাড়তি রোজগারের আশায় বারুদের স্তূপেও কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন এলাকার গরিব বাসিন্দারা। শুক্রবার কল্যাণী শহরের রথতলার একটি অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ কেড়ে নিয়েছে চারজনের প্রাণ। গুরুতর আহত হয়েছেন একজন। এলাকার মানুষের দাবি, বাড়তি রোজগারের আশায় বাধ্য হয়ে বাজি কারখানায় কাজ করছেন। কল্যাণী শহরের রথতলা, ঘটিপাড়া, স্কুলপাড়া, কল্যাণী ব্লকের চর কাঁচরাপাড়া, শহিদপল্লি, উত্তর ২৪ পরগনার হেলেঞ্চা কলোনি সহ ওই এলাকায় অন্তত ৫০টি এমন বাজি তৈরির কারখানা রয়েছে, যার বেশিরভাগই অবৈধ। দুর্ঘটনার পর অবশ্য এলাকার সমস্ত বাজি কারখানা বন্ধ রয়েছে। পুলিস সারারাত অভিযান চালিয়ে তিন কুইন্টাল নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা বলেন, পেটের দায়ে বারুদের স্তূপের উপর বাস করছি আমরা।


    বিস্ফোরণের পর শনিবার সকাল থেকে এলাকা ছিল থমথমে। ঘটনাস্থলে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পুলিস এদিনও গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে। ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা কয়েকটি উঁচু নারকেল গাছের ডগা পর্যন্ত ঝলসে গিয়েছে। ফলে আন্দাজ করা যায়, বিস্ফোরণ কতটা তীব্র ছিল। এদিন ফরেন্সিকের তিনজনের একটি প্রতিনিধি দল এসে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। বিকেলে ঘটনাস্থলে আসেন বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।


    রথতলা ও শহিদপল্লি এলাকায় কিছু বস্তি রয়েছে। সেখানে পরিবারের পুরুষরা ভ্যান বা টোটো চালান, অথবা দিনমজুরের কাজ করেন। পরিবারের মহিলারা অনেকেই বিভিন্ন বাজি কারখানায় কাজ করেন। তেমনই কল্যাণীর রথতলার টালিখোলা পালপাড়ায় শুক্রবার ওই বাজি কারখানায় কাজে এসেছিলেন বছর পঞ্চাশের বাসন্তী চৌধুরী। বাজি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মৃতার স্বামী দুর্গা চৌধুরী ৬১ বছর বয়সেও রিকশ চালান। অভাবের সংসারে হাল ধরতে গিয়ে স্ত্রীর যে এভাবে প্রাণ যাবে, তা এখনও ভাবতে পারছেন না দুর্গাবাবু। একই বক্তব্য ওই এলাকার স্কুল লেনের সাহা পরিবারের। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে বছর চল্লিশের দুর্গা সাহার। এছাড়া উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরের ভাঙনপাড়ার বাসিন্দা অঞ্জলি বিশ্বাস (৬২) ও রুমা সোনারও (৩৫) মৃত্যু হয়েছে বিস্ফোরণে।
  • Link to this news (বর্তমান)