• নিয়ম ভেঙে কলেজের জমি কর্মীর শাশুড়িকে বিক্রি
    এই সময় | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, এগরা: এগরায় সারদা শশীভূষণ কলেজের একটি জমি বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠল। পূর্ব মেদিনীপুরের এই কলেজের খোদ পরিচালন কমিটির অভিযোগ, তাদের অন্ধকারে রেখে প্রাক্তন অধ্যক্ষের ‘মদতে’ কলেজেরই এক কর্মী তাঁর শাশুড়িকে জলের দামে জমিটি বিক্রি করে দিয়েছেন।

    কয়েক দিন আগে ঘটনাটা প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে যায় এলাকায়। শনিবার তড়িঘড়ি বৈঠকে বসে কলেজ পরিচালন কমিটি। পরিচালন কমিটির অভিযোগ, তাদের অন্ধকারে রেখে কলেজের জমি বিক্রি করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে এগরার এসডিও’র কাছে আবেদন জানিয়েছে কমিটি। শনিবার দীর্ঘ বৈঠকের শেষে কমিটির সভাপতি ও এগরার বিধায়ক তরুণ মাইতি বলেন, ‘পরিচালন কমিটি জমি বিক্রি ও লেনদেনের বিষয়ে কিছু জানে না। সে কারণে আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে বলেছি এসডিওকে বলেছি।’

    জমিটা রয়েছে কলেজ থেকে কিছু দুরে পটাশপুর–এগরা রাজ্য সড়কের পাশে এগরা পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে আকলাবাদ মৌজায়। সেখানে ৫০১ ও ৫৭৪ দাগে ৮ ডেসিমেলের মধ্যে ২ ডেসিমেল জমি গত ২৮ জানুয়ারি কলেজের চুক্তিভিত্তিক অশিক্ষক কর্মী উদয়শঙ্কর পালের শাশুড়ি পম্পা নন্দকে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়। ২৯ তারিখ জমির রেজিস্ট্রিও হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, এই জমির দাম সরকার নির্দিষ্ট বাজার মৃল্যে আরও অনেক বেশি।

    বিধায়কের অভিযোগ, কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ ও কয়েকজন মিলে ওই জমি বিক্রি করেছেন বলে জানা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘গত ৩১ জনুয়ারি প্রিন্সিপাল অবসর নিয়েছেন। তার আগে ২৮ জানুয়ারি জমিটা বিক্রি করেছেন। যার কারণে কাকে কত টাকায় জমি বিক্রি করা হয়েছে, তা আমি বা পরিচালন কমিটি জানত না। অধ্যক্ষের অবসরের কয়েকদিন আগে জমি বিক্রি করায় পরিচালন কমিটির বৈঠক হয়নি।’ তিনি জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, পরিচালন কমিটির রেজ়োলিউশন ছাড়া কলেজের জমি কার কথায় প্রিন্সিপাল বিক্রি করলেন তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখছেন।

    এই জমি বিক্রির ঘটনায় যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, তাঁদের অন্যতম এগরা শহর তৃণমূল সভাপতি তথা কলেজের চুক্তিভিত্তিক অশিক্ষক কর্মী উদয়শঙ্কর পাল অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘যা বলার পরিচালন কমিটি বলবে।’ তবে পটাশপুরের বিধায়ক তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধাপতি উত্তম বারিক বলেন, ‘প্রিন্সিপাল আমাকে কলেজেরই দূরের জমিগুলো বিক্রি করে দিয়ে কলেজের জন্য কাছাকাছি জমি কিনতে চান বলে জানিয়েছিলেন। আমি যতটুকু জানি, নিয়ম মেনেই জমি বিক্রি করা হয়েছে।’

    অন্য দিকে, কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ দীপক তামিলি বলেন, ‘পরিচালন কমিটিকে জানিয়েই কলেজের জমি সরকারি দামে বিক্রি করা হয়েছে। ‘ন্যাক’র পরিদর্শনের জন্যে প্রচুর টাকা খরচ হয়েছিল। সেই ঘাটতি পূরণের জন্যে দূরের একটি জমি বিক্রি করতে হয়েছে। জমি বিক্রিতে কোনও অনিয়ম হয়নি।’

  • Link to this news (এই সময়)