এই সময়, মেদিনীপুর: ভাঙাচোরা বাড়ি। যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়ে ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। চারিদিকে আর্বজনায় ভর্তি। টিকটিকি ও অন্? পোকামাকড়ও ঘুরে বেড়াচ্ছে রান্নায় জায়গার আশপাশে। এমনই অবস্থা মেদিনীপুর শহরের স্টেশন সংলগ্ন ভুঁইয়াপাড়া এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের। অবিলম্বে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী। কারণ, বিষাক্ত পোকামাকড় যদি শিশুদের খাবারে পড়ে তা হলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে তারা।
দীর্ঘদিন ধরে ওই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই শিশু ও প্রসূতিদের জন্য রান্না হচ্ছে। বিষয়টি স্বীকার করছেন মেদিনীপুর সদর আরবানের সিডিপিও অপূর্বকুমার ঘোষ। তিনি বলেন, ‘সত্যি ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলে। ভালো কোনও বাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও আমরা ব্যর্থ। শহুরে এলাকায় অধিকাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি ভাড়া বাড়িতে চলে। বাড়ির ভাড়াও খুব সামান্য। বাড়ির জন্য ভাড়া বরাদ্দ মাত্র ৭৫০ টাকা। তাই কেউ বাড়ি না দিলে সেন্টার চালানো খুব সমস্যার।’
সম্প্রতি স্থানীয় কাউন্সিলার মৌ রায়ের সঙ্গেও কথা হয়েছে বলে তিনি জানান। একটি ক্লাবের সঙ্গেও কথা চলছে। তাঁর আশা, খুব শীঘ্রই কিছু একটা ব্যবস্থা হবে। কাউন্সিলার মৌ রায় বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে দু’টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে। একটি চলে কমিউনিটি হলে। আর এই ভুঁইয়াপাড়ায় যে সেন্টারটি চলে সত্যি তা খুবই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে। এই কেন্দ্র অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা দপ্তরের আধিকারিকদের কাছে একাধিকবার জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে শিশু ও প্রসূতিদের সুস্বাস্থ্যের চিন্তাভাবনা করছেন, সেখানে এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আইসিডিএস সেন্টার চলতে পারে না।’
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে নানা অভিযোগ শোনা যায়। কোথাও খাবারে টিকটিকি, কোথাও রান্না করা খাবার খেয়ে অসুস্থ হওয়া, আবার কোথাও সেন্টার থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া শিশুর খাবারে সাপও মিলেছে। মেদিনীপুর শহরে স্টেশন সংলগ্ন এলাকার এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দু’টি কেন্দ্রের মধ্যে একটি। এই এলাকার বাসিন্দারা অধিকাংশই গরিব। পুষ্টিকর খাবারের জন্য শিশু ও প্রসূতিরা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আসেন। স্থানীয় বাসিন্দা প্রীতি সিং, মিঠু মাদ্রাজি, অর্চনা ভুঁইয়ারা বলেন, ‘এর নাম অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র! এমন পরিবেশের মধ্যে শিশুদের খাবার রান্না হলে, শিশুদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। কারণ, রান্নার সময়ে খাবারে যদি কিছু পড়ে তা হলে খুব বিপদ।’