‘পড়ে শুধু গুড়ের পায়েস, দামি হাতঘড়ি’, অভয়ার জন্মদিনে চোখের জলে লড়াইয়ের বার্তা পরিবারের
প্রতিদিন | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
অর্ণব দাস, বারাকপুর: বছর না ঘুরতেই কতশত পরিবর্তন ঘটে যায় পৃথিবীতে। জীবন বদলে যায় কতজনের। অনেক হারানোর মাঝে আঁকড়ে থাকার মতো সম্বল বোধহয় শুধু স্মৃতিই। যা শত ঝড়েও মুছে ফেলা যায় না। তাই তো মেয়েকে হারানোর পর থেকে শুধু তাঁর স্মৃতিটুকু সঙ্গে নিয়েই প্রবলভাবে জীবনে বাঁচতে চান মা-বাবা। অতীত স্মরণ করে চোখে জল এলেও সেই জল মুছে মেয়ের সুবিচারের দাবিতে মনকে শক্ত করে তুলছেন তাঁরা। আজ, ৯ ফেব্রুয়ারি আর জি কর হাসপাতালের নির্যাতিতা চিকিৎসকের জন্মদিন। আজ, প্রয়াত মেয়েকে নিয়েই দিনভর ব্যস্ত রইলেন কন্যাহারা মা-বাবা।
ভরা মাঘে জন্ম। তাই মেয়ের পছন্দ ছিল গুড়ের পায়েস। প্রতি বছর মেয়ের জন্মদিনে নিজের হাতে পায়েস তৈরি করতেন মা। আজ, এত বছর পর তা আর হল না। চোখ ভরা জল নিয়ে অভয়ার মা বললেন মেয়ের জন্মদিনের কথা। বললেন, “খুব কষ্ট হচ্ছে… প্রতি জন্মদিনে মেয়ে আমার হাতের গুড়ের পায়েস খেতে ভালোবাসত। কর্মস্থলেই ওর জন্মদিন পালন হত। সারাদিন রোগী দেখে কাটাত। রাতে বাড়িতে ফিরে কেক কাটত, পায়েস খেত। গতবছর ২২ হাজার টাকা দিয়ে একটা ঘড়ি কিনে মেয়েকে উপহার দিয়েছিলাম। খুব খুশি হয়েছিল! মাত্র দুদিন ঘড়িটা পরেছিল। সেই ঘড়িটা পড়েই রইল। জন্মদিন প্রতি বছরই আসবে, কিন্তু মেয়েকে আর ফিরে পাব না। মেয়ের কথা ভেবেই জন্মদিনের আগের রাত কেটে গিয়েছে, ঘুমাতে পারিনি।”
কথা ছিল, আজকের দিন থেকে নতুন করে সুবিচারের লড়াই শুরু হবে। অভয়া নিজে যেমন কর্মদ্যোগী ছিলেন, তেমনই কর্মযজ্ঞ হবে তাঁর জন্মদিনে। সেইমতো রবিবার সোদপুর নাটাগড়ের পার্থপুর ও মহেন্দ্রনগর এলাকায় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ‘অভয়া ক্লিনিক’ চলে। প্রচুর রোগী দেখা হয় ক্লিনিকে। ছিলেন অভয়ার মা-বাবাও। সেখানেই বাবা বললেন, ”বিচার না পাওয়ার ছ মাসে বিচারের দাবিতে লড়ছি, লড়ে যাব। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব। ১৩ আগস্টের দুপুরের পর থেকে পানিহাটির কোনও তৃণমূল নেতা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তবে আমার বাড়ির দরজা ওঁদের জন্যও খোলা রয়েছে। ওঁরা চাইলে আসতেই পারেন।”