পায়ে পায়ে ১০০ বছর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দা ভবানীপ্রসাদ চক্রবর্তী ৮ ফেব্রুয়ারি হাসি মুখে পার করলেন শতবর্ষের মাইল ফলক। ভরা পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে কাটলেন কেকও। এই ‘সেঞ্চুরি’-কে ঘিরে খুশিতে মেতে উঠলেন চক্রবর্তী পরিবারের সদস্যরা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের সুন্দরার বাসিন্দা ভবানীপ্রসাদ। নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে তিনি পার করেছেন জীবনের ১০০টি বছর। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে নাতি-নাতনি, পরিবার, পরিজন সকলকে নিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি নিজ বাসভবনে কেক কাটলেন তিনি। সাড়ম্বরে পালিত হলো শতায়ু ভবানীপ্রসাদের জন্মদিন। তাঁর এতগুলি বছর পার করার পিছনে মূল মন্ত্র হলো নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন।
জানা গিয়েছে, ভবানীপ্রসাদ স্থানীয় বাসুদেবপুর প্রথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। অবসর গ্রহণের পর বাড়ির চাষবাসের কাজে মনোনিবেশ করেছেন। এর পাশাপাশি তিনি নিয়ম করে পুকুরে স্নান ও সাঁতার কাটতেন। এমনকী তিনি এখনও নিয়ম করে প্রতিদিন সংবাদপত্রও পড়েন।
এ দিন জন্মদিনের মেনুতে ছিল কেক, পায়েস, রসগোল্লা। সঙ্গে মাছ ও মাংসের নানা রকমের পদ। মহিষাদলের এই শতায়ুর প্রিয় খাবার আলুপোস্তা আর ডাল। তবে প্রথম থেকেই খাওয়াদাওয়ার প্রতি ছিল তাঁর তীব্র নিয়ন্ত্রণ। বর্তমানে তিনি চিড়ে সিদ্ধ, হরলিক্স, বিভিন্ন ফলের রস, মাছের ঝোল দিয়ে ভাত খেতেই বেশি পছন্দ করেন। এত আয়োজন দেখে খুশিতে আত্মহারা ভবানীপ্রসাদ নিজে। তিনি বলেন, ‘পরিবারের সদস্যরা যে অভাবনীয় আয়োজন করেছে, আমি তাতে আপ্লুত।’
জানা গিয়েছে, ভবানীপ্রসাদ পরিবারে রয়েছেন সাত নাতি-নাতনি, চার ছেলে এবং তিন মেয়ে। এক কথায় বলতে গেলে একেবারে ভরা সংসার। কাজের সূত্রে সবাই বাইরে থাকলেও এ দিন সকলেই একসঙ্গে হাজির হয়েছিলেন গ্রামের বাড়িতে। পাশাপাশি এ দিন তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে চক্রবর্তী পরিবারে ব্যস্ততাও ছিল চূড়ান্ত পর্যায়ে।
ভবানীপ্রসাদ নাতি-নাতনিরা জানিয়েছে, তাঁরা চান, দাদু যেন সবসময়ে তাঁদের সঙ্গে এ ভাবেই থাকেন। দাদুর আশীর্বাদ ও আদর্শ মেনেই আগামী দিনে আরও এগিয়ে যেতে চান তাঁরা। ভবানীপ্রসাদ ছেলে বিধায়ক তিলককুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘বাবা আমাদের কাছে বটবৃক্ষ। তাঁর আদর্শেই আমরা ভাই-বোনেরা বড় হয়েছি। আমি বর্তমানে মহিষাদল বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হিসাবে কাজ করছি। বিধানসভা যাওয়ার আগে বাবাকে প্রণাম ও তাঁর কথা শুনেই যাই। ছোট থেকেই আমরা নানা রকম সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। বাবা আমাদের সঙ্গে সুস্থ্ ভাবে আরও বেশ কিছু বছর থাকুক এটাই ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি।’