পড়াশোনায় অমনোযোগী মেয়ে। শনিবার দুপুরে বকাবকি করেছিলেন মা। বিকেল গড়াতে না গড়াতেই মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হলো বাড়ির দোতলার ঘর থেকে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় থানার গৈতাকিসমত এলাকায়।
পুলিশ সুত্রে খবর, মৃত নাবালিকার নাম রূপালী খাটুয়া (১৫)। গৈতা হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। তার বাবা নিতাই খাটুয়া যাত্রা শিল্পী। শনিবার বিকেলে বাড়ির লোকজন রূপালীর দেহ উদ্ধার করে বেলদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রবিবার বেলদা থানার পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তের জন্য খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রূপালীর বাবা শনিবার বাড়িতে ছিলেন না। দুপুরে মা-এর সঙ্গে পড়াশোনা নিয়ে বচসা হয় রূপালীর। বিকেলে বারবার ডাকাডাকির পরও তার সাড়া না পেয়ে দোতলার ঘরে যায় রূপালীর দিদি। তখনই সে দেখে রূপালী গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, মায়ের বকাবকি সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী।’
উল্লেখ্য, শনিবার দুপুরে আত্মঘাতী হয়েছিল ডেবরা ব্লকের বালিচক গার্লস হাইস্কুলের এক ছাত্রীও। টেস্ট পরীক্ষায় ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পাওয়ার পরও, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অনন্যা দাসের আত্মহত্যা ঘিরেও নানা প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের প্রধান ডঃ কাবেরী ভট্টাচার্য বলেন, ‘বর্তমান সময়ে ছেলে মেয়েদের মধ্যে অসহিষ্ণুতা, হতাশা প্রকৃতি বাড়ছে।
বড্ড বেশি প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। এ জন্য অভিভাবকদের অনেক বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সামান্য বকাবকির কারণে কিংবা একদিনে কেউ আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় না। মনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই একটা হতাশা বা অবসাদ কাজ করে। এ জন্য আমরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মশালার উপর জোর দিচ্ছি।’