• বাংলাদেশে রপ্তানি শুরু, চুল কিনতে ফেরিওয়ালারা পাড়ি জমাচ্ছেন ভিনরাজ্যে  
    বর্তমান | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কান্দি: প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে অশান্তির জেরে মুর্শিদাবাদের চুল ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়ে যান। বন্ধ হয়ে যায় চুল রপ্তানি। তবে সম্প্রতি ফের চুল রপ্তানি শুরু হওয়ায় খুশি জেলার ব্যবসায়ীরা। জেলা থেকে প্রতিদিনই চুল রপ্তানি হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন। ফলে স্থানীয় ফেরিওয়ালারাও চুল কিনতে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিতে শুরু করেছেন। খুশির ঝলক ফেরিওয়ালাদের চোখেমুখেও।


    প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জেলার বিভিন্ন প্রান্তের কয়েক হাজার পরিবার চুল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কান্দি, ভরতপুর, বেলডাঙা, ডোমকল, হরিহরপাড়া ও রেজিনগর এলাকায় কয়েকশো চুল ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাঁরা মহিলাদের মাথার ঝরে যাওয়া চুল কিনে এনে সেগুলি প্রসেসিং করে ব্যবহারযোগ্য করে তোলেন। এরপর প্রসেসিং করা চুল বাংলাদেশ, মায়ানমার, চীন ইত্যাদি দেশে রপ্তানি করা হয়। তবে জেলার বেশিরভাগ ব্যবসায়ী বাংলাদেশে চুল রপ্তানি করে থাকেন। পরে বাংলাদেশ থেকে অন্যান্য দেশে চুল রপ্তানি করা হয়। কয়েকমাস আগে বাংলাদেশে গণ্ডগোলের জেরে জেলা থেকে চুল রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এমনকী, লেনদেনও আটকে যায়। জেলার চুল ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকমাস পর ফের ব্যবসা কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। পুরনো লেনদেন এখনও আটকে আছে। কিন্তু ফের নতুন করে ব্যবসা শুরু হয়েছে। এমনকী চীনের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে এসে চুল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে জেলা থেকে ফের বাংলাদেশে চুল রপ্তানি শুরু হয়েছে। চুলের দরও কিছুটা বেড়েছে। বাংলাদেশে ভারতীয় মুদ্রায় ১০ হাজার টাকায় এদেশের চুল বিকোচ্ছে।


    ভরতপুরের চুল ব্যবসায়ী সৈয়দ আব্দুল আজিম বলেন, বাংলাদেশে কয়েকমাস চুল রপ্তানি করা যায়নি। তবে দিনসাতেক হল ফের রপ্তানি শুরু হয়েছে। ফলে আমরা ভীষণ খুশি। স্থানীয় বিনোদিয়া গ্রামের চুল ব্যবসায়ী কুতুবউদ্দিন শেখ বলেন, বাংলাদেশে চুল রপ্তানি শুরু হওয়ায় কয়েক হাজার পরিবার নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছেন। যেসব ফেরিওয়ালারা অন্য কাজ করছিলেন, তাঁরাও সম্প্রতি ফের ভিনরাজ্যে চুল কেনার জন্য পাড়ি দিচ্ছেন।


    উল্লেখ্য, জেলার কয়েক হাজার পরিবারের পুরুষ মাথার ঝরে যাওয়া চুল কিনতে বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে যান। মাসখানেক ধরে চুল কেনার পর তাঁরা নিজের গ্রামে ফিরে আসেন। তারপর চুল ব্যবসায়ীদের কাছে তাঁরা ওই চুল বিক্রি করেন। ভরতপুর থানার ইব্রাহিমপুরের ফেরিওয়ালা হাসমত শেখ বলেন, প্রায় তিনমাস ধরে ফেরি করে চুল কেনা বন্ধ রাখতে হয়েছিল। কারণ মহাজন আর চুল কিনছিলেন না। তবে ফের ব্যবসা শুরু হতেই গ্রামের অনেকে ফেরি করতে অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছেন। সালারের হাজামপাড়ার ফেরিওয়ালা আলেপ শেখ বলেন, দু’দিন হল মহাজনের কাছে দাদন নিয়ে ঝাড়খণ্ডে চুল কেনার জন্য এসেছি। অনেকদিন এই এলাকায় কেউ আসেননি। তাই চুল সংগ্রহও ভালো হচ্ছে। এবার আর একমাস নয়, ১৫দিন ফেরি করেই গ্রামে ফিরে যাব। • নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)