উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল ক্যাম্পাসে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ শুরু
বর্তমান | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: অবশেষে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর থেকে অবৈধ দোকান বাজার সরিয়ে দেওয়ার অভিযান শুরু হল। রবিবার বিশাল পুলিস বাহিনী নিয়ে এই অভিযান চলে।
হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের গা ঘেঁষে স্থায়ী দোকান বাজার দীর্ঘদিন ধরে চলে আসে। এর পাশাপাশি হাসপাতাল চত্বরে যেখানে সেখানে নানা ধরনের দোকান তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে বারবার ঘোষণা করা হলেও শেষ পর্যন্ত এই অবৈধ দোকান বাজার সরানো সম্ভব হয়নি।
আরজি কর কাণ্ডের পর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা জোরদার করতে রাজ্য সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ করে। সিকিউরিটি অডিট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির চেয়ারম্যান সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ গত ৩ ডিসেম্বর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। তখনই তাঁর নজরে আসে হাসপাতালে এ ধরনের অবৈধ দোকান বাজার। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এ ধরনের দোকান বাজার ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তিনি এসব দ্রুত সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন স্থানীয় পুলিস প্রশাসনকে। তারপরও এই অবৈধ দোকান বাজার এত দিন সরানো হয়নি।
রোগী কল্যাণ সমিতির গত বৈঠকে সরকারের প্রতিনিধি শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের নির্দেশ মতো হাসপাতাল চত্বরে থাকা অবৈধ সব দোকান বাজার সরিয়ে দেওয়া হবে। এখানে মা ক্যান্টিন ও খাদ্যসাথীর ক্যান্টিন ছাড়া আর কোনও দোকান থাকবে না।
এদিন অভিযান শুরু হতেই প্রসূতি বিভাগের গা ঘেঁষে গজিয়ে ওঠা স্থায়ী বাজারের ব্যবসায়ীরা চলে আসেন। তাঁরা পুলিস ও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন আর কিছুদিন সময় দিন। তাঁরা নিজেরাই দোকান সরিয়ে নেবেন এই বলে তাঁরা সময় চান। পুলিসের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তাঁদের সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের ডেপুটি সুপার সুদীপ্ত মণ্ডল। তাই প্রসূতি বিভাগের গা ঘেঁষে গজিয়ে ওঠা স্থায়ী বাজার ভাঙার আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়। সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, ব্যবসায়ীরা সময় চেয়েছেন। সেই মতো তাঁদের সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে তাঁরা তাঁদের দোকান সরিয়ে না নিলে আমরাই সেই দোকান উঠিয়ে দেব।
দীর্ঘদিন ধরে এই বাজার চলে আসছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে। এই বাজার থেকে অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা সব সময় থাকে। কারণ এখানে গ্যাস জ্বালিয়ে অধিকাংশ দোকানে রান্না করা হয়। অনেকদিন আগেই বাজার সরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাতে ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসনের দাবি তুলেছে বিভিন্ন সময়ে। এ ব্যাপারে রোগী কল্যাণ সমিতির গত বৈঠকের পর গৌতম দেব বলেছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা ব্যবসা করে আসছেন তাঁদের বিকল্প জায়গার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হবে। তবে যে হারে প্রতিদিনই নতুন নতুন দোকান গজিয়ে উঠেছে তাদের জন্য এই ভাবনা কার্যকর হবে না।
হাসপাতাল চত্বরে অবৈধ দোকান বাজার তুলে দেওয়ার নির্দেশের পাশাপাশি একাধিক প্রবেশ পথ বন্ধ করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। সেসব অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকিপূর্ণ প্রবেশপথ কবে বন্ধ হবে সেব্যাপারে এখনও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না।