• কাল ধূপগুড়ির বড়কালী পুজো ও মেলার উদ্বোধন  
    বর্তমান | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • উজ্জ্বল রায়, ধূপগুড়ি: পর্যটকদের কাছে হতে পারত জল্পেশ কিংবা জটিলেশ্বরের মতো প্রসিদ্ধ স্থান। কিন্তু নানা কারণে উত্তরবঙ্গে পর্যটনের মানচিত্রে অজানাই রয়ে গেল অজানা শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত ধূপগুড়ির বড়কালী মায়ের মন্দির। পরশু, বুধবার বড়কালী মায়ের বাৎসরিক পুজো। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে পুণ্যার্থীরা পুজো দিতে পারবেন। রয়েছে পাঁচদিন ব্যাপী পুজো ও মেলা‌। 


    পুজো ও মেলার উদ্বোধন হবে কাল, মঙ্গলবার। প্রতিবছর এ সময় কালীপুজো হয়ে থাকে। পুজো উপলক্ষ্যে এই রাজ্যের পাশাপাশি অসম, ভুটান, নেপাল থেকেও পুণ্যার্থীরা আসেন। কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হয়। এক হাজারের কাছাকাছি পাঁঠা এবং পাঁচ হাজারের বেশি পায়রা উৎসর্গ করা হয়। ভক্তদের ধারণা, এখানকার কালীমাতা খুবই জাগ্রত। ভক্তিভরে প্রার্থনা করলে মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। 


    এই পুজোকে ঘিরে রয়েছে কিছু কথিত কাহিনী‌। কী সেই কাহিনী? পুজো কমিটির সম্পাদক নরেশচন্দ্র রায় বলেন, মন্দিরের পাশ দিয়েই একটি রাস্তা সোনাখালি পর্যন্ত গিয়েছে। বর্তমানে রাস্তাটি পাকা হলেও একসময় জঙ্গলে ঘেরা ছিল। কথিত আছে দেবতারা যাতায়াত করার জন্য রাতারাতি রাস্তা তৈরি করেছিলেন। রাস্তার নাম দেওয়া হয়েছিল দেওমালী। এই রাস্তা দিয়েই কালী মা এই মন্দিরে আসতেন। একটা সময় কার্তিক মাসে কালীপুজোর রাতেই পুজো হতো। কিন্তু বহুকাল আগে স্থানীয় এক ব্যক্তির একমাত্র ছেলে হারিয়ে যায়। তিনি কালীমাতার কাছে প্রার্থনা করেন যদি ছেলেকে মা কালী খুঁজে এনে দেন তাহলে তিনি ফাল্গুন মাসেই পুজো দেবেন। এক রাতে ওই ব্যক্তি দেখতে পান বাড়িতে ছেলে এসে হাজির। 


    তিনি ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কে তাকে এনে দিল? তার উত্তরে ছেলে বলেছিল, এক বৃদ্ধা বাড়িতে পৌঁছে দিলেন। কিন্তু কে সেই বৃদ্ধা? অনেক খোঁজাখুঁজির পরও বৃদ্ধার খোঁজ পাওয়া যায়নি। সেই থেকেই এখানে ফাল্গুন মাসে পুজো হয়ে থাকে। আর এই বড়কালীর নাম অনুসারে জনপদটির নাম হয় ওঠে কালীরহাট। 


    পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য উত্তম রায় বলেন, মা খুব জাগ্রত। আগে পুরনো মন্দিরে পুজো হলেও মন্দির কমিটি নতুন করে মন্দির নির্মাণ করে। সরকার গুরত্ব দিলে এখনেও জল্পেশ ও জটিলেশ্বরের মতো প্রসিদ্ধ স্থান গড়ে উঠত। আসতেন পর্যটকরা। 


    আজ, সোমবার থেকে শুরু মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছে পুজো কমিটি। কোষাধ্যক্ষ কৃষ্ণপদ রায় বলেন, কোনও মাইক বাজবে না। পুজো ও মেলার শৃঙ্খলা রক্ষার্থে থাকছে প্রচুর পুলিস সহ আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা।
  • Link to this news (বর্তমান)