নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: এবার সন্দেহভাজন দুই বাংলাদেশি যুবক পাকড়াও রায়গঞ্জে। শনিবার রাতে টহল দেওয়ার সময় রায়গঞ্জ স্টেশন চত্বর থেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে রায়গঞ্জ থানার সাদা পোশাকের পুলিস। ধৃতদের কাছ থেকে বাংলাদেশি পরিচয়পত্র, টাকা, মোবাইল বাজেয়াপ্ত হয়েছে। পুলিসের অনুমান, তারা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। রায়গঞ্জের পুলিস সুপার সানা আখতার বলেন, সোর্স মারফৎ খবর পেয়ে রায়গঞ্জ থানার পুলিস মহম্মদ রাশেদুল ইসলাম (২৮) ও মহম্মদ রফিকুল মিয়াঁ (৩২) নামে দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বাড়ি বাংলাদেশের উলিপুর ও সাদুল্লাপুর থানা এলাকায়। তাদের রায়গঞ্জে আসার উদ্দেশ্য সহ বিভিন্ন কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদের গতিবিধি যথেষ্ট সন্দেহজনক।
কয়েকমাস আগেই রাজ্যে জেহাদি সংগঠনের হদিশ মেলে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ও ইসলামপুরের পুলিস নজরদারি বাড়িয়েছে। শনিবার রাতে রায়গঞ্জ স্টেশনের পার্কিং লটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় দুই বাংলাদেশি যুবককে। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাধিকাপুরগামী ট্রেনে চেপে এখানকার বাংলাদেশ সীমান্তে পালানোর ছক ছিল বাংলাদেশিদের। চাদর মুড়ি দিয়ে দু’জন সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিল। সাদা পোশাকের পুলিসকর্মীরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই একজন পালানোর চেষ্টা করে। পুলিস পিছু ধাওয়া করে একজনকে ধরে ফেলে। অন্যজন পরিচয় জানাতে গিয়ে ঘাবড়ে যায়। অসংলগ্ন কথা বলে। পুলিস দুজনকেই ধরে প্রাথমিক কথাবার্তা বলে। তারা নিজেদের বাংলাদেশি বলে কবুল করে। তাদের একজনকে তল্লাশি চালিয়ে বাংলাদেশি পরিচয়পত্র ও টাকা পায় পুলিস। সন্দেহ আরও দৃঢ় হয় পুলিসের।
পরে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পায়। সম্ভবত বাংলাদেশে গোলমালের আগে হিলি সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে দু›জন এদেশে অনুপ্রবেশ করে। এবং আশ্রয় নেয় পাশের রাজ্য বিহারের কিষানগঞ্জ, কাটিহার এলাকায়। সেখানেই ছিল। অনুমান সেখানে কোনও অপরাধমূলক কাজে তারা যুক্ত থাকতে পারে। এবার তারা বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার ছক কষছিল রাধিকাপুর সীমান্ত দিয়ে।
কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে উত্তাল অবস্থার আবহে বেশ কিছু বাংলাদেশি সীমান্ত পেরিয়ে এরাজ্যে ঢোকে। কখনও বিএসএফ, কখনও পুলিস তাদের আটক করে। কিছু ক্ষেত্রে বিএসএফ নিরীহ বাংলাদেশিদের ফ্ল্যাগ মিটিং করে বিজিবির হাতে তুলে দেওয়ার নজির রয়েছে। কিন্তু যেভাবে একের পর এক অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়ছে, তাতে অনেকের প্রশ্ন, সীমান্তে বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে। যদিও বিএসএফ জানিয়েছে, সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ আটকাতে ধারাবাহিক নজরদারি চলে। পুলিসের থেকেও সহযোগিতা মেলে।