• জমি ও বাড়ির রেজিস্ট্রেশনেই সম্পত্তি করের স্বমূল্যায়ন বাধ্যতামূলক রাজ্যে
    বর্তমান | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • প্রীতেশ বসু ও সৌম্যজিৎ সাহা, কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সম্পত্তি কর নির্ধারণের জন্য স্বমূল্যায়ন (সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট) পদ্ধতি ইতিমধ্যে চালু হয়েছে রাজ্যের সব পুরসভায়। এবার পঞ্চায়েত দপ্তর রাজ্যের গ্রামাঞ্চলেও একই পদ্ধতি চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে কোনও ফাঁক যাতে না থেকে যায়, তা নিশ্চিত করতে জমি-বাড়ি কেনার পর রেজিস্ট্রেশনের সময়েই স্বমূল্যায়ন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। নতুন কেনা সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশনের সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছে যাবে স্বমূল্যায়নের নোটিস। ওই প্রক্রিয়া না সম্পন্ন করলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে রাজ্য। সম্পত্তি কর ফাঁকি বন্ধ করতেই পঞ্চায়েত দপ্তরের এই উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে। পুরসভাগুলির পর পঞ্চায়েত এলাকায়ও এই নিয়ম লাগু হয়ে গেলে গোটা রাজ্যই সম্পত্তি করের স্বমূল্যায়নের আওতায় চলে আসবে।


     সম্প্রতি অনলাইনে সম্পত্তি কর জমা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তর। এর জন্য বাসিন্দারা স্বমূল্যায়নের একটি নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতে জমা দিয়েছেন। তারপর সেই নথি নির্দিষ্ট পোর্টালে ‘আপলোড’ করা হচ্ছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে কর নির্ধারণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে। সেই মতো বাসিন্দারা সম্পত্তি কর মেটাচ্ছেন। তারপরও বহু জায়গায় স্বমূল্যায়ন পদ্ধতি ঠিকমতো হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন রয়েছে। তাই এক্ষেত্রে আরও গুরুত্ব দিয়ে রেজিস্ট্রেশন ও স্ট্যাম্প ডিউটি বিভাগের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে  চলেছে পঞ্চায়েত দপ্তর।


    সংশ্লিষ্ট এক আধিকারিকের কথায়, ‘যে মুহূর্তে একজন ক্রেতা বাড়ি বা জমি কিনে তার রেজিস্ট্রেশন করাবেন, তখনই ওই সম্পত্তি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চলে আসবে দপ্তরের নাগালে। এরপর দপ্তর থেকেই এসএমএস করে ক্রেতাকে তাঁর সম্পত্তির স্বমূল্যায়ন করতে নির্দেশ দেওয়া হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি ওই কাজ না করছেন, ততক্ষণ নিয়মিত তাঁকে বার্তা পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতকেও এনিয়ে নজরদারি চালাতে বলা হবে। স্বমূল্যায়নে যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা সঠিক কি না, সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত তাদের মতো করে বিষয়টি যাচাই করে নেবে। ফলে কোনওভাবেই কর ফাঁকি দেওয়া যাবে না।’ তবে  যাঁরা জমি-বাড়ি আগেই কিনেছেন ও রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলেছেন, তাঁরা স্বমূল্যায়ন করে নিয়মিত সম্পত্তি কর মেটাচ্ছেন কি না, আগামী দিনে সেদিকেও নজর দেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। 


    সরকারি নথি অনুযায়ী, বর্তমানে রাজ্যে ১ কোটি ৮৩ লক্ষ বাড়ি আছে। এই সংখ্যা আরও কিছুটা বাড়বে, কারণ এখনও কিছু গ্রামীণ এলাকায় সমীক্ষা বাকি রয়েছে। পঞ্চায়েত এলাকায় অনলাইনে সম্পত্তি কর জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর কেটে গিয়েছে প্রায় এক মাস। এই সময়কালে সম্পত্তি কর খাতে জমা পড়েছে প্রায় ১১ লক্ষ টাকা।


    সরকারি কর্তাদের আশা, রেজিস্ট্রেশনের সময় সম্পত্তি করের স্বমূল্যায়ন বাধ্যতামূলক হয়ে গেলে বছর দু’য়েক পর শুধু পঞ্চায়েত এলাকার সম্পত্তি কর খাতেই ৩০০ থেকে ৩৫০ কোটি টাকা ঢুকবে রাজ্যের কোষাগারে। 
  • Link to this news (বর্তমান)