• বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের দু’দিন পর ছন্দে ফিরল কল্যাণী
    বর্তমান | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কল্যাণী: কল্যাণী শহরে অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরে কেটে গিয়েছে দু’দিন। রবিবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে এলাকার জনজীবন। ঘটনাস্থলে উৎসুক মানুষের জটলা আগের মতো আর নেই। গত শুক্রবার কল্যাণী শহরের রথতলায় একটি অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হলে চারজনের মৃত্যু হয়েছিল। গুরুতর আহত হন একজন। রবিবার সিআইডি ও বম্ব স্কোয়াডের প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁরা বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করার পাশাপাশি বাজি তৈরির মশলা সেখান থেকে সরিয়ে দেন।‌ এলাকা থেকে কিছু শব্দবাজিও উদ্ধার করেন তাঁরা।


    এই অবৈধ বাজি কারখানার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই এখন ঘরছাড়া। স্থানীয়দের একটা অংশের দাবি, শুক্রবার রাতে বিস্ফোরণের পর অবৈধ বাজি ব্যবসায়ীরা গঙ্গা পেরিয়ে অনেকেই ওপাড়ে হুগলিতে গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন বেশ কিছু বড় বড় বস্তা। বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া বাজি কারখানার মালিক সাধন বিশ্বাস ছাড়া পুলিস এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন বাড়ি থেকে পুলিস এই দু’দিনে কয়েক কুইন্টাল নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেছে। সাধন বিশ্বাস গত ১৫ বছর ধরে বাজির কারবার করেন। ২০২২ সাল নাগাদ অবৈধ বাজি তৈরির অপরাধে একবার গ্রেপ্তারও হন। কিন্তু মাস ঘুরতে না ঘুরতেই জামিন পেয়ে যান। এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর দহরম মহরম রয়েছে। পুলিস আপাতত সাধনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে বিভিন্ন তথ্য পেতে চাইছে।


    গত শনিবার বিকেলে ময়নাতদন্তের পর কল্যাণীর পুলিস মর্গ থেকে চারটি দেহ সংশ্লিষ্ট পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, দেহগুলি এতটাই পুড়ে গিয়েছিল যে, একটি দেহের আঙুলে থাকা আংটি দেখে পরিবারের সদস্যরা চিহ্নিত করতে পারলেও বাকি তিনটি দেহকে খালি চোখে শণাক্ত করতে পারেননি। শেষমেশ দেহের বিভিন্ন গঠন মিলিয়ে পরিবারের সদস্যরা কোনওরকমে দেহ চিহ্নিত করেন। 


    স্থানীয় বাসিন্দা মালবিকা দাস বলেন, এইভাবে চারজনের মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনার পর আমাদের এলাকায় প্রচুর মানুষ আসা-যাওয়া করছে। সোমবার থেকে মাধ্যমিক শুরু। এছাড়াও বিভিন্ন ক্লাসে পরীক্ষা চলছে। এই পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে এলাকা শান্ত হওয়া প্রয়োজন। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)