• রাত পোহালে মিনি কুম্ভ, ত্রিবেণীতে হাজির ‘বাইকবাবা’
    বর্তমান | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: রাত পোহালে হুগলির মিনি কুম্ভে বেজে উঠবে পুণ্যশঙ্খ। তার আগে মহা কুম্ভ থেকে মিনি কুম্ভে চলে এলেন ‘বাইকবাবা’।


    গেরুয়া রঙে রাঙানো বাইক, সে গাড়ির শরীরজুড়ে দেবদেবীদের অবস্থান। বাইকের সামনেই আছেন মহাদেব শিব। আর সিটে সওয়ার ভস্মমাখা জামাতিয়া মহন্ত ছোটু গিরি নাগাবাবা। তিনি সদ্য প্রয়াগরাজে ছিলেন। সন্ত মহলে ত্রিবেণী কুম্ভের সন্ধান পেয়ে বাইক নিয়ে চলে এসেছেন বাঁশবেড়িয়ায়। শাহি স্নান করে যাবেন বৈষ্ণোদেবী। সেখানেও বাইক নিয়েই যাবেন। চারদিনের টানা সফর করে রবিবার সকালে এসে পৌঁছেছেন বাঁশবেড়িয়ায়। বসেছিলেন গঙ্গার ধারে। ছোটু গিরি একা নন, ইতিমধ্যেই এখানে আসতে শুরু করেছেন বহু সাধুসন্ত। গঙ্গাপাড়ে চলছে মেলার তোড়জোড়। আর নাগাসাধুরা  জমিয়ে বসেছেন। 


    মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে ত্রিবেণীর মিনি কুম্ভ। তার আগে রবিবার কার্যত মেলা শুরুর ইঙ্গিত মিলছে। রীতিমতো আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছেন বাইকবাবা নাগা সাধু। কাশী বারাণসীর সাধু তিনি। কিন্তু প্রায় ১৫বছর বাইক নিয়ে দেশের সমস্ত ধর্মীয় আয়োজনে হাজির থাকছেন। লোকমুখে তাই হয়ে উঠেছেন বাইকবাবা। তার জন্য তাঁর বেনজির গড়নের বাইকটির ভূমিকা কম নয়। রবিবার নাগা বাবা বলেন, ‘দীর্ঘ পথ বাইকে অতিক্রম করে অযোধ্যায় রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠায় গিয়েছিলাম। সেখানকার ভক্তরাই বাইকের কিছু অংশ গড়ে দিয়েছেন। আমার বাইকের সামনে সর্বদা বিরাজমান থাকেন শিবশম্ভু। তিনিই পথ দেখান। প্রয়াগে গিয়েছিলাম। শুনছিলাম পুণ্যতীর্থ ত্রিবেণীতে কুম্ভ স্নান হবে। তাই চলে এলাম।’ নাগা সাধু জানিয়েছেন, এবারই প্রথমবার তিনি ত্রিবেণী কুম্ভে এসেছেন। আয়োজন তাঁর পছন্দ হয়েছে। তাই ভবিষ্যতেও আসবেন। ধর্মের সঙ্গে ইতিহাস নিয়েও ব্যাপক আগ্রহ বাইকবাবার। এদিন স্থানীয় মানুষদের যেমন তাঁকে নিয়ে কৌতূহলের অন্ত ছিল না, তেমনই তিনিও ত্রিবেণীর ইতিহাস সম্পর্কে খোঁজখবর করছিলেন। মেলার প্রস্তুতি নিয়ে বাইক বাবার প্রশংসা বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগীরও। তিনি বলেন, ‘প্রশাসনিক বৈঠকের পর থেকে দিনরাত এক করে মেলার প্রস্তুতি হয়েছে। নাগা বাইকবাবার ত্রিবেণী পছন্দ হয়েছে, আয়োজন ভালো লেগেছে, সেটা আমাদের কাছে বাড়তি প্রাপ্তি। তবে গত কয়েকবছর ধরেই আমরা ত্রিবেণীতে কুম্ভ স্নানের আয়োজন করেছি। অতীতের ভুল যাতে এবার না হয় তার দিকে নজর রাখা হয়েছে। এখন শুধু মেলা ও স্নান পর্ব শুরুর অপেক্ষা।’ গত কয়েকদিন ধরেই আয়োজকদের পাশাপাশি ঘাম ঝরাতে শুরু করেছে পুলিস, প্রশাসন ও পুরসভা। ইতিমধ্যেই পুলিস ও প্রশাসনিক কর্তারা একাধিকবার মেলার আয়োজন খতিয়ে দেখে গিয়েছেন। এখন মেলাতে আসতে শুরু করেছেন সাধুসন্তুরা। গেরুয়া সাজ আর সাধুসঙ্গে বর্ণময় হয়ে উঠেছে ত্রিবেণীর গঙ্গার পাড়। 
  • Link to this news (বর্তমান)