• উকিল পরিচয় দিয়ে পুলিসকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা দুষ্কৃতীদের
    বর্তমান | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কলকাতা পুলিসের এসটিএফের হাতে বড়বাজার থেকে অস্ত্র সহ ধৃত উত্তরপ্রদেশের তিন দুষ্কৃতী আইনজীবীর পরিচয় দিয়ে কলকাতায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। তাদের গাড়িতেও অ্যাডভোকেটের লোগো লাগানো ছিল। পুলিসের কাছে অভিযুক্ত সন্তোষ সাহানি নিজেকে আইনজীবী বলে পরিচয় দিয়েছিল। তদন্তে নেমে এই তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারীদের। কোথা থেকে তারা এই গাড়িটি জোগাড় করেছিল, তা জানার চেষ্টা করছেন তাঁরা।


    শুক্রবার রাতে বড়বাজারে একটি গাড়ির এয়ারফিল্টারের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয় দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র। গাড়িতে থাকা তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। লালবাজার সূত্রে খবর, গাড়িটি আটকানোর পর তাঁদের নজরে আসে গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনের উপরে আইনজীবীরা যে লোগো বা সিম্বল ব্যবহার করেন, সেটি লাগানো রয়েছে। এখান থেকেই সন্দেহের সূত্রপাত। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, পরিকল্পনা করেই তারা এই লোগো লাগিয়েছিল, যাতে কোথাও কেউ ধরলে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে সহজেই বেরিয়ে আসা যায়। এর পরিকল্পনা করে সন্তোষ। তদন্তে জানা গিয়েছে, সন্তোষের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকজন আইনজীবীর পরিচয় রয়েছে। সেখান থেকেই সে লোগো জোগাড় করেছিল। পাশাপাশি তার আইনের ডিগ্রি রয়েছে বলে অনেকেই জানত। আইনজীবী হিসেবে উত্তরপ্রদেশ বার কাউন্সিলের দেওয়া পরিচয়পত্রও সে সঙ্গে রাখত। পুলিস ধরলে সেটিকে বিভিন্ন জায়গায় দেখাত। এসটিএফের হাতে ধরা পড়ার পর সে তার আই কার্ড দেখিয়ে কিছুটা হুঁশিয়ারির ঢংয়ে বলার চেষ্টা করে, আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করা ঠিক হচ্ছে না। কলকাতায় তারা এসেছে মামলার কাজে। সেই কথা প্রমাণ করতে সে কিছু ভুয়ো পিটিশনও দেখায় তদন্তকারীদের। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, যাতে বিভ্রান্ত হয়ে পুলিস তাদের গাড়িটি ছেড়ে দেয়।  যদিও তার দেখানো পরিচয়পত্র নিয়ে সংশয় রয়েছে তদন্তকারীদের। প্রাথমিকভাবে এটি জাল বলে মনে করছেন তাঁরা। এই বিষয়টি জানতে চেয়ে তাঁরা চিঠি দিচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে। তদন্তে উঠে এসেছে, কলকাতায় ঢোকার পর তারা যে গেস্ট হাউসে উঠেছিল, সেখানে নিজেদের আইনজীবী বলে পরিচয় দিয়েছিল। এরপর শহরের বিভিন্ন এলাকায় এই পরিচয়ে তারা গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। বিভিন্নজনকে তারা বলছিল, মামলার কাজে কলকাতায় এসেছে। কিন্তু তদন্তকারীরা জানতে পারছেন, আইনজীবী পরিচয় দিয়ে কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ত অভিযুক্তরা। বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার নাম করে ভয় দেখিয়ে তারা টাকা লুট করত। এইভাবে তারা শহরে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজকর্ম করে বেড়াচ্ছিল বলে অভিযোগ।
  • Link to this news (বর্তমান)