• সামনে পরীক্ষা, পোড়া ঘরে দুই মেয়ের বইয়ের খোঁজে মা-বাবা
    বর্তমান | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘মাস পেরলেই ওদের পরীক্ষা। একটাও বই আস্ত নেই। আমার দুই মেয়েরই অঙ্কে খুব ভয়। সারা বছর যে খাতায় ওরা অঙ্ক প্র্যাকটিস করত, সেই খাতাটা সকালে দেখলাম। কালো হয়ে পড়ে রয়েছে। কিন্তু হাতে তুলতেই ঝুরঝুর করে পড়ে গেল। হাতে লেগে থাকল শুধু ছাই।’ কথাগুলো বলতে বলতে চোখের কোণে জল চলে এল মহম্মদ ওয়াসিমের। পেশায় তিনি একজন ক্যাবচালক। ২৫ বছর ধরে তাঁদের ঠিকানা নারকেলডাঙা থানা এলাকার ক্যানাল ওয়েস্ট রোডের এই ঝুপড়ি। মাসে ১০০ টাকা ভাড়ায় তাঁরা সপরিবারে থাকেন এখানেই। 


    শনিবার রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে সবে ঘুমোতে গিয়েছেন। তখনই গাড়ির চাকা ফাটার বিকট শব্দ শুনতে পান। ওয়াসিমের পাশেই শুয়েছিল তাঁর দুই মেয়ে। বড় মেয়ের নাম ফিজা খাতুন। টাকি গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী সে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে ১৪ বছরের কিশোরী। বাবা বলছিলেন, ‘আমার বড় মেয়ে পড়াশোনায় মোটামুটি। তবে ছোট মেয়ে যথেষ্ট মেধাবী। তার নাম উসমা খাতুন। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।’ আগুন লাগার পরই দুই মেয়েকে মামাবাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন ওয়াসিম। দুই মেয়ের বইখাতা কিছু বেঁচে আছে কি না, এদিন সকাল থেকে তিনি ছাইয়ের মধ্যে সেটাই খুঁজছিলেন। ওয়াসিমের কথায়, ‘সবাই বলে যাচ্ছে বাড়ি করে দেব, খাবার দেবে। কিন্তু আমার মেয়েরা পরীক্ষা কী করে দেবে, এটাই আমার সবচেয়ে বড় চিন্তা। জানি না, কীভাবে কী করব!’ 
  • Link to this news (বর্তমান)