• বনের হরিণ চলে এসেছে গ্রামে, ভিড় সুরেন্দ্রগঞ্জে
    বর্তমান | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ : পাথরপ্রতিমার দক্ষিণ সুরেন্দ্রগঞ্জ গ্রামটি একটেরে, ছোট। চোখের নজরের আড়ালেই থাকে এরকম গ্রাম। এই গ্রামটিও সেরকমই ছিল। কিন্তু হঠাৎ একটি হরিণের আগমনে হয়ে উঠেছে পর্যটনস্থল। দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসছেন শুধুমাত্র হরিণটি দেখতে। তার একটি কারণও আছে।


    গ্রামের গৃহপালিত গোরু-ছাগল-কুকুরের সঙ্গে ঘুরে বেড়ায় বনের হরিণ। তার গায়ের রং সোনার মতো। সে সোনার হরিণ দেখতেই ভিড়। মজার বিষয়, তার অত্যাচারে ত্রাহি রব গ্রামে। হরিণটি বেগুন খেতে খুব ভালোবাসে। ফলে কারও চাষের খেতে বেগুন নেই। ফাঁক পেলেই সে সব খেয়ে নিচ্ছে। এছাড়া চাল-ধান-অন্যান্য সব্জিও খেয়ে চলেছে। চাষের ফসল খেয়ে নেওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে কৃষকদের। তবুও হরিণকে কেউ শাসন করেন না। প্রাণীটি আদরের হয়ে উঠেছে গোটা গ্রামের।


    পাথরপ্রতিমার জি-প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ সুরেন্দ্রগঞ্জ গ্রামে হরিণটি এসেছিল ছোট থাকতে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, আইলা ঝড়ের সময় সে তমলুক জঙ্গল থেকে নদী পেরিয়ে চলে এসেছিল। তখন থেকেই গ্রামে থাকে। বড় হওয়ার পর বিভিন্ন জায়গায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এর বাড়ির উঠোন, ওর বাড়ির দালানে অবাধ যাতায়াত তার। নকুল দে নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘হরিণটির অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট। বাগানের কোনও শাকসবজি আর বাড়িতে নিয়ে আসা যায় না। কোনও গাছে বেগুন থাকে না। বেগুন খেতে ও খুব পছন্দ করে। উঠোনে ধান শুকোতে দিলেও খেয়ে পালিয়ে যায়। রান্নাঘরে ঢুকে শাক-সব্জিও খেয়ে পালায়।’ 


    সোনার হরিণটি মূলত ঝোপঝাড়ে ঘোরে। সন্ধ্যা হলে যায় উধাও হয়ে। অনেকের অনুমান, গ্রামের এক পাশে নদী রয়েছে। ওই নদীর তীরে জঙ্গল। সেই জঙ্গলে রাত কাটায় সে। ভোর হলে আবার গ্রামে চলে আসে। বনদপ্তর প্রাণীটির বিষয়ে বিলক্ষণ ওয়াকিবহাল। আধিকারিকদের বক্তব্য, প্রাণীটির শরীর-স্বাস্থ্যের দিকে নজর রয়েছে। লাগাতার নজরদারির আওতাতেই আছে বনের হরিণ। শিশুরা মাতৃক্রোড়ে সুন্দর। আর বন্যেরা বনে। তবে সুরেন্দ্রগঞ্জে বিষয়টি উল্টে গিয়েছে। এখানে বনের হরিণ দিব্যি দিন কাটায় গ্রামের শাক-সব্জি খেয়ে। গোরু-ছাগলের সঙ্গে ঘুরে।
  • Link to this news (বর্তমান)