কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করতে পারেনি বলেই দিল্লি নির্বাচনে জয়ী হয়েছে BJP। সোমবার এমন মন্তব্য করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ফলাফলের জন্য ইন্ডিয়া জোটের দুই শরিককে সমানভাবে দায়ী করলেন তিনি।
এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দিল্লির নির্বাচনে কয়েক শতাংশের হেরফেরে ভোটের ফলাফল নির্ধারিত হয়েছে। কংগ্রেস নমনীয় হয়ে জোট করলে এমনটা হতো না। হরিয়ানাতে AAP যদি কংগ্রেসকে নিয়ে চলত, তাহলেও ফল অন্যরকম হতো।’ এর পরই মমতার সংযোজন, ‘কংগ্রেস আপ নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করেনি।’
২০১৫ এবং ২০২০ সালে আম আদমি পার্টি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দিল্লিতে ক্ষমতায় এসেছিল। জিতেছিল যথাক্রমে ৬৭ এবং ৬২টি আসন। তবে ২০২৫-এ কেজরির দলের ঝুলিতে এসেছে মোটে ২২টি আসন। হেরে গিয়েছেন খোদ অরবিন্দ কেজরিওয়াল। হেরেছেন তাঁর প্রাক্তন ডেপুটি মণীস সিসোদিয়াও। কোনও মতে মান রক্ষা করেছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী আতিশি। ফলে হ্যাটট্রিক হাতছাড়া হয়েছে AAP-এর। কমেছে তাদের ভোটের হারও। ২০১৫ এবং ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কেজরির দলের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল যথাক্রমে ৫৪.৫ শতাংশ এবং ৫৩.৫৭ শতাংশ। যা এ বার কমে দাঁড়িয়েছে ৪৩.৫৭ শতাংশ। এই পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না হওয়াকেই দায়ী করছেন ইন্ডিয়া জোটের বাকি শরিকরা।
২৭ বছর পর ক্ষমতায় ফিরেছে BJP। তাদের প্রাপ্ত ভোট ৪৫.৫৬ শতাংশ। ঝুলিতে এসেছে ৪৮ আসন। ২০১৫ সালের তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৩২.৩ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ছিল ৩৮.৫১ শতাংশ।
১৯৯৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস দিল্লিতে শূন্যের হ্যাটট্রিক করল। একটি আসন না মিললেও ভোট বেড়েছে ২.১ শতাংশ। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, এটাই তাদের সান্ত্বনা পুরস্কার। ২০২০ সালে তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৪.৩ শতাংশ। যা এ বছর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.৩৪ শতাংশ।
দিল্লি ভোটের বেশ খানিকটা আগে থেকেই অরবিন্দ কেজরিওয়াল, শরদ পাওয়ার, লালুপ্রসাদ যাদব, অখিলেশ যাদব, উদ্ধব ঠাকরের মতো বিরোধী জোটের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের অনেকেই ইন্ডিয়া জোটের চালিকাশক্তি হিসেবে কংগ্রেসের বদলে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চেয়ে সওয়াল করেছিলেন। দিল্লির ফলপ্রকাশের পর কংগ্রেসের উপর অনাস্থার সুর আরও চওড়া হচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক কারবারিদের একাংশ।
জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা বিরোধী জোটের মধ্যে এই খেয়োখেয়িকে নিশানা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘অউর লড়ো আপস মে।’ অর্থাৎ নিজেদের মধ্যে আরও লড়াই করো। ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে এই কোন্দলে বীতশ্রদ্ধ খোদ শরিকরাই।