লন্ডনে বাংলায় লেখা সেই রেলস্টেশনের নাম মুছে যাচ্ছে? আসরে ইলন মাস্কও
আজ তক | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা রুপার্ট লোউ দাবি করেছেন, 'স্টেশনের নাম শুধুমাত্র ইংরেজিতে থাকা উচিত, অন্য কোনও ভাষায় নয়।' তার এই মন্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কও প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সংক্ষিপ্তভাবে লিখেছেন— 'হ্যাঁ।'
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড়
রবিবার এক্স (আগের টুইটার)-এ একটি ছবি পোস্ট করে রিফর্ম ইউকে পার্টির এমপি রুপার্ট লোউ লেখেন, 'এটা লন্ডন। স্টেশনের নাম ইংরেজিতেই থাকা উচিত। শুধুই ইংরেজিতে।' তাঁর এই পোস্টের পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। অনেকেই তাঁর বক্তব্য সমর্থন করলেও, অনেকে আবার পাল্টা যুক্তি দেন যে, বহুজাতিক লন্ডনে একাধিক ভাষার ব্যবহার মোটেই অন্যায় নয়। বিতর্ক আরও জোরালো হয়, যখন ইলন মাস্ক সরাসরি লোউ-এর বক্তব্যের সমর্থন করেন।
উল্লেখ্য, ইলন মাস্ক সম্প্রতি রিফর্ম ইউকে পার্টির নেতৃত্বে নাইজেল ফারাজের পরিবর্তে রুপার্ট লোউকে বসানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। ফলে, মাস্কের এই সমর্থন রাজনৈতিকভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলা সাইনবোর্ড লাগানোর কারণ
বিতর্কিত এই বাংলা সাইনবোর্ডের ইতিহাস ২০২২ সালের। লন্ডনের পূর্ব অংশে হোয়াইটচ্যাপেল টিউব স্টেশনে বাংলা ভাষায় সাইনবোর্ড লাগানো হয়। মূলত, বিশাল বাংলাদেশি অভিবাসী সম্প্রদায়ের অবদানকে সম্মান জানাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
জানা গেছে, হোয়াইটচ্যাপেল এলাকাটি যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় বাংলাদেশি জনবসতির অন্যতম কেন্দ্র। স্থানীয় প্রশাসনের উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের উদ্যোগে দ্বিভাষিক সাইনবোর্ড লাগানো হয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা
এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২২ সালের মার্চ মাসে এক্স-এ তিনি লিখেছিলেন—
'লন্ডন টিউব রেল হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে, যা আমাদের হাজার বছরের পুরনো ভাষার গুরুত্ব ও শক্তিকে প্রতিফলিত করে। এটি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জয়। বিশ্বজুড়ে বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর উচিত একসঙ্গে সাংস্কৃতিক ঐক্যে কাজ করা।'
বাংলা সাইনবোর্ড কি সরিয়ে ফেলা হবে?
বর্তমানে এই বাংলা সাইনবোর্ড থাকা না থাকা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। ইলন মাস্কের মন্তব্যের পর বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। বহু মানুষ বলছেন, লন্ডন বহু সংস্কৃতির শহর এবং সেখানে একাধিক ভাষায় সাইনবোর্ড থাকা স্বাভাবিক। অন্যদিকে, রুপার্ট লোউ-এর মতো অনেকে মনে করছেন, যুক্তরাজ্যের স্টেশনগুলোর নাম ইংরেজিতে থাকা উচিত এবং অন্য কোনও ভাষার প্রয়োজন নেই।