ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে গার্ডওয়াল তৈরিতে বরাদ্দ ৬৫ কোটি, কাজ শুরু শিলাবতী নদীর পাড়ে
প্রতিদিন | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: আরও একধাপ এগোল ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ। শুরু হয়ে গেল ঘাটাল শহরে গার্ডওয়াল তৈরির কাজ। একই সঙ্গে শুরু হয়েছে স্লুইস গেট তৈরির কাজও। ঘাটাল পুরসভার টাউন হলে মাস্টার প্ল্যানের কাজ খতিয়ে দেখতে ফের মনিটারিং কমিটির বৈঠক হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি। সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটাল শহরের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিলাবতী নদী। তার বাম পাড়ে সাড়ে তিন কিলোমিটার গার্ডওয়াল তৈরির জন্য মাটি পরীক্ষা শুরু করেছে একটি ঠিকাদার সংস্থা। অন্যদিকে, দাসপুরের জোতকানুরামগড়ে স্লুইস গেট তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান মনিটারিং কমিটির সদস্য তথা জেলা কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ আশিস হুতাইত বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেয়ে রাজ্য অর্থ দপ্তর দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে দিয়েছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য। ইতিমধ্যেই ঘাটাল শহরে শিলাবতী নদীর বাম তীরে গার্ডওয়াল তৈরির জন্য মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পাঁচটি স্লুইস গেট তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। চলতি বছরে বর্ষার আগেই শেষ হবে স্লুইস গেট তৈরির কাজ।”
ঘাটাল শহরে তিন ও নয় নম্বর ওয়ার্ডে যে দুটি পাম্প হাউস বসছে তারও টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলাবতী নদীর বাম তীরে সাড়ে তিন কিলোমিটার গার্ডওয়াল তৈরির জন্য মোট ৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বরাত পেয়েই গার্ডওয়াল তৈরির জন্য মাটি পরীক্ষা শুরু করে দিয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা। সংস্থার সুপারভাইজার গোবিন্দ দাস বলেন, “মাটি পরীক্ষার জন্য ১৩টি জায়গায় বোরিং করা হচ্ছে। প্রায় ১০০ ফুট নিচ থেকে মাটি নিয়ে তা পরীক্ষার জন্য সেচ দপ্তরে পাঠানো হবে। রিপোর্ট এলেই শুরু হয়ে যাবে গার্ডওয়াল তৈরির কাজ।”
অন্যদিকে, দু’টি পাম্প হাউস তৈরির জন্য জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। ঘাটাল শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণনগর ও নয় নম্বর ওয়ার্ডে বসছে দু’টি হেভি পাম্প হাউস। দু’টি পাম্প হাউসের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৩১ কোটি টাকা। এদিকে, শিলাবতী নদীর বাম তীরে সেচ দপ্তরের জায়গা জবরদখলকারীদের সরে যাওয়ার জন্য শীঘ্রই বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চলেছে সেচ দপ্তর। শিলাবতী নদীর বাম পাড়ে সেচ দপ্তরের জায়গা জবরদখল করে প্রায় এক হাজারের বেশি অবৈধ নির্মাণ রয়েছে। দখলমুক্ত করার পরই শুরু হয়ে যাবে গার্ডওয়াল তৈরির কাজ। গার্ডওয়াল পাঁচ ফুট উঁচু করা হবে। সেচ দপ্তরের যুক্তি, বন্যার সময় এই পাড় উপচে জল ঢুকে পড়ে ঘাটাল শহরে। তা আটকাতেই এই গার্ডওয়াল।
ঘাটাল মহকুমা সেচ দপ্তরের আধিকারিক উজ্জ্বল মাখাল বলেন, “চলতি বছরের বর্ষার আগেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রাথমিক কাজ শেষ করা হবে। তাই জোরকদমে চলছে স্লুইস গেট থেকে গার্ডওয়াল তৈরির কাজ। খুব শীঘ্রই দু’টি পাম্প হাউসের কাজও শুরু হয়ে যাবে।”