• বিজেপি রুখতে এক হতে হবে ‘ইন্ডিয়া’কে, দিল্লিতে আপ-কং ভোট ভাগাভাগিতে বার্তা মমতার
    প্রতিদিন | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • কৃষ্ণকুমার দাস: দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে আপ ও কংগ্রেসের মুখোমুখি লড়াই ও লজ্জার হারে এবার কড়া বার্তা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, বিজেপিকে রুখতে গেলে এক হতে হবে ‘ইন্ডিয়া’কে। তা না হলে এর পরিণতি দিল্লি বা হরিয়ানার মতোই হবে বলে বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

    শনিবার দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে ৭০ আসনের মধ্যে মাত্র ২২টি আসন পেয়েছে আপ। কংগ্রেস শূন্য। অভিযোগ উঠেছে, এই ভোটে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ করেছে হাত শিবির। দিল্লির লজ্জার ফল প্রকাশ্যে আসার পর ইন্ডিয়া জোটকে বার্তা দিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, “দিল্লিতে কংগ্রেস আপকে সাহায্য করেনি। আবার হরিয়ানাতে আপ কংগ্রেসকে সাহায্য করেনি। যার জন্য দুই জায়গায় বিজেপি জিতে গিয়েছে। এই দুই দল একসঙ্গে থাকলে ভোটের ফল অন্যরকম হতে পারত।” এই ভোট ভাগাভাগির খেলা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে সে কথা স্মরণ করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একে অপরের সঙ্গে বোঝাপড়া করে থাকতে হবে সব দলকে। তা না হলে, জাতীয় স্তরে ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে বিজেপিকে রোখা কঠিন হবে।”

    তবে দিল্লি ভোটের ফলের প্রভাব যে বাংলায় পড়বে না সে কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন বাংলার নেত্রী। জানিয়ে দেন, বিজেপিকে রোখার জন্য বাংলায় যথেষ্ট শক্তিশালী তৃণমূল। ২০২৬ সালের নির্বাচনে দুই তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় ফিরবে। সোমবার বিধানসভার পরিষদীয় দলের বৈঠকে তৃণমূল নেত্রীর বুঝিয়ে দেন, দেশের অন্যান্য প্রান্তের রাজনৈতিক পটভূমি ও বাংলার পটভূমি সম্পূর্ণ আলাদা। ২০২৬-এর নির্বাচনে তৃণমূল যে একাই লড়বে সে কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে মমতা বলেন, “বাংলায় কংগ্রেসের কিছু নেই। ফলে এখানে ওদের সঙ্গে জোটের প্রশ্নই ওঠে না। বাংলায় একাই লড়ব আমরা। একাই দুই তৃতীয়াংশের বেশি আসন পেয়ে চতুর্থবারের সরকার করব।”

    উল্লেখ্য, বাংলায় বিজেপিকে রুখতে তৃণমূলই যে একমাত্র শক্তিশালী মুখ সে কথা বহুবার প্রমাণ করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে প্রতিবার নির্বাচনের আগে বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধে কংগ্রেস চেষ্টা করেছে তৃণমূলের শক্তিক্ষয় করার। যদিও তাতে খুব বিশেষ লাভ হয়নি বরং আখেরে ক্ষতি হয়েছে কংগ্রেসেরই। শুধু বাংলা নয়, জাতীয় মঞ্চেও বিজেপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী মুখ হিসেবে উঠে এসেছেন তৃণমূল নেত্রী। অথচ কংগ্রেসের জমিদারি মানসিকতা লাগাতার ক্ষতি করে গিয়েছে ইন্ডিয়া জোটের। সময় যত পেরিয়েছে কংগ্রেসের জমিদারি মানসিকতার জেরে জাতীয় মঞ্চে মুখ থুবড়ে পড়েছে হাত শিবির।

    এই অবস্থায় দিল্লি ভোটে হারের পর তৃণমূল নেত্রীর এই বার্তা একদিকে যেমন জোটকে ঐক্যবদ্ধ রাখার কথা বলেছে, অন্যদিকে তেমনই কংগ্রেসের জমিদারি মানসিকতাকে নিশানা করেছে। কারণ, দেশের রাজধানী দিল্লির মতো জায়গায় একের পর এক নির্বাচনে শতাব্দী প্রাচীন দলের শূন্য পাওয়া, এমনকী নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ করা কংগ্রেসের নিজের জন্য তো বটেই, জোটের জন্যও চরম লজ্জার। অথচ রাজ্যে রাজ্যে গিয়ে এই দলই আঞ্চলিক দলগুলির উপর ‘জমিদারি’ ফলায়। কংগ্রেসের এই ঔদ্ধত্য যে ইন্ডিয়া জোট কোনওভাবে মানবে তা সোমবার ইঙ্গিতে তা স্পষ্ট করে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)