অদম্য মনের জোর, প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতাল শয্যা থেকে মাধ্যমিকের উত্তরপত্র লিখল মুর্শিদাবাদের ছাত্রী ...
আজকাল | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা, মাধ্যমিক। সোমবার হাসপাতালের শয্যা থেকে বাংলা পরীক্ষা দিতে হল মুর্শিদাবাদের এক অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীকে। সোমবার নির্ধারিত কেন্দ্রে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন হঠাৎ প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় বাংলা পরীক্ষার কিছুটা উত্তর পরীক্ষা কেন্দ্রে লেখার পর বাকি উত্তর হাসপাতালে শয্যায় বসে লিখল ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের কান্দি থানা এলাকায়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কান্দি বাগডাঙ্গা রামেন্দ্রসুন্দর বিদ্যাপীঠের ওই ছাত্রীর পরীক্ষার আসন পড়েছিল কান্দি রাজা মনীন্দ্র চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে। কিছুক্ষণ উত্তর লেখার পর হঠাৎই তার প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয় এবং দ্রুত সেখানে কান্দি থানার পুলিশ এবং প্রশাসনের আধিকারিকরা পৌঁছে যান। এরপর ওই ছাত্রীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কান্দি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। প্রশাসন এবং পর্ষদের ব্যবস্থায় সেখানে বসেই বাকি উত্তর লেখে ওই ছাত্রী।
তার এক আত্মীয় জানিয়েছেন, ‘দশ বছর আগেই ওই ছাত্রীর বিয়ে হয়। এখন সে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বাংলা পরীক্ষা চলাকালীন হঠাৎই তার পেটে ব্যথা ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে বসেই বাকি পরীক্ষা দিয়েছে সে।’
অন্যদিকে, পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার পর জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিল রঘুনাথগঞ্জের এক ছাত্রী।
জঙ্গিপুর খোড়িবোনা হাইস্কুল থেকে এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে ওই ছাত্রী। তার পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছিল মির্জাপুর দ্বিজপদ হাই স্কুলে। সোমবার সকালে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে হঠাৎ করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে শাহিনা খাতুন নামে ওই ছাত্রী।
কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার অদম্য ইচ্ছে থাকায় ওই ছাত্রী শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তি থাকতে রাজি হয়নি। তার পরিবারের সদস্যদের জানায় সে পরীক্ষায় বসতে চায়। এরপরই পরিবারের সদস্যরা দ্রুত মির্জাপুর দ্বিজপদ হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শিক্ষা দপ্তর এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে মাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষা দেয় শাহিনা।
মির্জাপুর দ্বিজপদ হাইস্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক সঞ্জিত হালদার বলেন, ‘পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় হঠাৎই ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পর্ষদের নির্দেশে জঙ্গিপুর হাসপাতালে তার জন্য একটি পৃথক কক্ষের ব্যবস্থা করা হয় এবং সেখানে ‘গার্ড’ হিসেবে আমি নিযুক্ত ছিলাম।’