ধীমান রায়, কাটোয়া: কেতুগ্রামের চেঁচুড়ি গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় শুরু হল রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূল এই ঘটনায় সিপিএমের দিকে আঙুল তুলেছে। সিপিএমের দাবি, তৃণমূল গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই এলাকায় বোমা মজুত করে রাখা হয়েছিল। সেই বোমা ফেটেই এই ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার সন্ধ্যায় চেঁচুড়ি গ্রামের মেহেবুব আলম নামে এক ব্যক্তির পরিত্যক্ত বাড়ির পাশে শৌচালয়ে বোমা বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের জেরে শৌচাগারের ছাদ উড়ে যায়। দেওয়ালগুলি ভেঙে পড়ে। ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। মেহবুব আলম যদিও প্রায় ১৫ বছর ধরেই কর্মসূত্রে বাইরে রয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিশ একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের অনুমান বেশ কয়েকটি বোমা ওই পরিত্যক্ত শৌচাগারের মধ্যে মজুত করা ছিল। কোনওভাবে তা ফেটে যায়। এদিকে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর ।
এদিন কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনাওয়াজ সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, “লোকসভা ভোটের আগে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের কর্মী মিন্টু শেখকে বোমা মেরে খুন করেছিল। ওই সময়ে সিপিএম দুষ্কৃতীদের মজুত করে রাখা বোমা ফেটেই এই ঘটনা ঘটেছে।” যদিও শাসকদলের অভিযোগ নস্যাৎ করে সিপিএমের কেতুগ্রাম ১ এরিয়া কমিটির সদস্য মিজানুল কবীর ধীরাজ বলেন, “মিন্টু শেখ নিজের দলেরই অপরপক্ষের হাতে খুন হয়েছিল। খুন হওয়ার কয়েকদিন আগে চাকতা বাসস্ট্যান্ডে কাজল শেখের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল মিন্টুর। এই ঘটনাও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। যে ভিন্ন গোষ্ঠী মিন্টু শেখকে খুন করেছিল তারা এখনও গ্রাম ছাড়া। আর মিন্টু শেখের লোকজনরাই বোমা মজুত করে রেখেছিল বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে। বোমাগুলি সরাতে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটে। এর সঙ্গে সিপিএমের কোনও সম্পর্ক নেই।”
চেঁচুড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামবাসীরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। পুলিশ এলাকায় টহল দিচ্ছে। মঙ্গলবার এলাকায় ফরেন্সিক দল আসতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে এদিন সোমবার পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। উল্লেখ্য, গতবছর মে মাসে লোকসভা ভোটের কয়েকদিন আগে চেঁচুড়ি গ্রামের বাসিন্দা আনখোনা অঞ্চলের ২ নম্বর বুথের তৃণমূল সভাপতি মিন্টু শেখ তার এক সঙ্গী দলীয় প্রচার সেরে বাড়ি ফেরার সময় মিন্টুকে বোমা ছুড়ে এবং কুপিয়ে খুন করে কয়েকজন দুষ্কৃতী। ওই ঘটনায় ওই গ্রামেরই বাসিন্দা এক সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ দশজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দাঁয়ের করেন নিহতের স্ত্রী তুহিনা খাতুন।