ইউনুসের ভয়ে লন্ডনেও মোছা হচ্ছে ‘জয় বাংলা’, ‘এপার বঙ্গে গর্বের স্লোগান আছে ও থাকবে’, জানালেন মমতা
প্রতিদিন | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
কৃষ্ণকুমার দাস: শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বাংলাদেশে কার্যত নিষিদ্ধ। এবার ইউনুস সরকারে ‘খেচর’দের ভয়ে লন্ডনের বাঙালি ঠিকানা (বাড়ি, দোকান, রেস্তরাঁ) থেকেও মুছে ফেলা হচ্ছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। একথা জানতে পেরে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তিনি জানিয়ে দিলেন, কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। বাংলাদেশে যাই হোক, “আমাদের এখানে জয় বাংলা স্লোগান আছে এবং থাকবে”।
এদিন বিধানসভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘরোয়া আলাপচারিতায় লন্ডনের বাঙালি ঠিকানা থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান মুছে ফেলা হচ্ছে, একথা জানতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘জয় বাংলা’ লেখা থাকলেই আওয়ামি লিগ তথা শেখ হাসিনার সমর্থক বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানে জয় বাংলা স্লোগান আছে এবং থাকবে। কারণ এই স্লোগান কাজী নজরুল ইসলামের একটি কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, বাংলা ও বাঙালির গর্ব প্রকাশ করার জন্য ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া হয়।
ছ-মাস আগে হাসিনা সরকারের পতনের পরেই বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের স্মৃতি মুছে বাঙালি জাতিসত্ত্বায় আঘাত হানার কৌশল নিয়েছিল ইউনুস প্রশাসন। এরপর ইউনুস সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে হাই কোর্টের ২০২০ সালের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট। ২০২০ সালের ১০ মার্চ হাই কোর্টের দুই বিচারপতি ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বাংলায় দেওয়া রায়ে বলা হয়েছিল, “আমরা ঘোষণা করছি যে জয় বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে।” এর পর ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দেয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা। সম্প্রতি এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে ইউনুস সরকার। ২০২০ সালের ১০ মার্চের রায়ে স্থগিতাদেশ চান সরকারি কৌশলী। নতুন সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতির নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় পদ্মাপাড়ের সুপ্রিম কোর্ট।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান না রাখার অর্থ আসলে পাকিস্তানপন্থী নয়া বাংলাদেশের পথ প্রশস্ত করা। যেখানে মুক্তিযুদ্ধ থেকে ভাষা আন্দোলনের মতো বাঙালি জাতির বলিদানের তথা আবেগের কোনও দাম থাকবে না। সেকথারই প্রমাণ দেয় হাসিনা সরকারের পতনের ছয় মাস পরে গত বুধবার মুজিবের ৩২ ধানমন্ডির বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা। তবে গঙ্গাপাড় থেকে জয় বাংলা স্লোগান তথা বাঙালি জাতিসত্ত্বাকে মোছা যাবে না, বুঝিয়ে দিলেন বাংলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।