• ঘটনাবহুল মাধ্যমিকের প্রথম দিন নির্বিঘ্নে মিটল বাংলা পরীক্ষা
    বর্তমান | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান ও আসানসোল: দুই বর্ধমানে সুষ্ঠুভাবে সম্পূর্ণ হল প্রথম দিনের মাধ্যমিক পরীক্ষা। জেলার কোথাও টোকাটুকি হয়নি। পূর্ব বর্ধমানে ৮০২জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা না দেওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে। তাদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। অনেকেই পরীক্ষার আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে। সেই কারণে ছাত্রীদের অনেকে পরীক্ষায় বসতে পারেনি বলে শিক্ষকশিক্ষিকাদের অনুমান। পূর্ব বর্ধমান জেলার মাধ্যমিক পরীক্ষার কনভেনর অমিত ঘোষ বলেন, পাঁচজন পরীক্ষার্থী হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।


    পরীক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন স্কুলের গেটে শুভেচ্ছা জানায়। কৃষ্ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য দেবু টুডু। তিনি বলেন, প্রতিবছরই আমরা পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাই। কেউ সমস্যায় পড়লে তড়িঘড়ি সহযোগিতা করা হয়।


    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে যাতে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা না হয়, তারজন্য বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে পুলিস মোতায়েন করা হয়েছিল। কোথাও যানজট তৈরি হলে পুলিস তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নিয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ সহ অন্যান্য আধিকারিকরা বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। মেমারি, খণ্ডঘোষ, রায়না, ভাতার সহ সব জায়গাতেই পরীক্ষার্থীরা সুষ্ঠুভাবে কেন্দ্রে পৌঁছে যায়। বর্ধমানের এক ছাত্র অ্যাডমিট কার্ড আনতে ভুলে গিয়েছিল। এক ট্রাফিক পুলিস আধিকারিক বাইক চালিয়ে তার বাড়ি পৌঁছে যায়। নির্দিষ্ট সময়ের আগে অ্যাডমিট কার্ড তার হাতে তুলে দেওয়া হয়। জেলার বেশ কয়েকজন পড়ুয়া মোবাইল হাতে হলে ঢোকার চেষ্টা করে। যদিও চেকিংয়ে তারা ধরা পড়ে যায়। বর্ধমানের রথতলায় পাঁচজন পড়ুয়ার মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়। তারা শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছে দাবি করে, না জেনে তারা মোবাইল এনেছিল। পরের দিনগুলিতে তারা তা আনবে না বলে প্রতিশ্রতি দেয়। রায়না-১ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শৈলেন্দ্রনাথ সাঁই বলেন, শ্যামসুন্দর আদর্শ বিদ্যালয়ে আটজন ছাত্রী অনুপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যে একজনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সে শ্বশুরবাড়িতে রয়েছে। প্রত্যেকের বাড়িতে আমরা গিয়েছিলাম। ছেলে মেয়েদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠানোর জন্য অভিভাবকদের বলা হয়েছে। 


    পুলিস ও প্রশাসনের তৎপরতায় সোমবার পশ্চিম বর্ধমানেও মাধ্যমিকের প্রথম দিনের পরীক্ষা মিটল নির্বিঘ্নেই। জেলার ৪৭৯ জন পড়ুয়া পরীক্ষা দেয়নি। আসানসোল সেন্ট মেরি গোরেটি গার্লস স্কুলের ছাত্রী অনুষ্কা কুমারী ভর্মা জন্ডিসে আক্রান্ত। সে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি। স্কুলের কাছ থেকে খবর পেয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ হাসপাতালেই তার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করে। সোমবার সে পরীক্ষা দিয়েছে। জেমুয়া ভাদুবালা হাইস্কুলের পড়ুয়া বিষ্ণু পাহারে ভর্তি হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানেই তার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কুলটি ট্রাফিক গার্ডের পুলিসের উদ্যোগে পরীক্ষা দিতে পেরেছে গঙ্গা বাউরি ও চন্দনা বাউরি। তাদের সিট পড়েছিল কুলটি গার্লস স্কুলে। তারা অ্যাডমিট আনতে ভুলে গিয়েছিল। পুলিস নিজেদের গাড়িতে চাপিয়ে তাদের বাড়ি থেকে অ্যাডমিট এনে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে। একই ঘটনা ঘটে কাঁকসার মলানদিঘি দুর্গাদাস বিদ্যামন্দির পরীক্ষা কেন্দ্রে। কুলডিহার দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট না নিয়েই সেন্টারে হাজির হয়েছিল। পুলিস তাদের বাড়ি থেকেও অ্যাডমিট আনার ব্যবস্থা করে। একই ঘটনা ঘটে বার্নপুর আদর্শ বিদ্যালয়েও। এক পড়ুয়ার অ্যাডমিট হীরাপুর থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার বাইকে করে গিয়ে বাড়ি থেকে গিয়ে নিয়ে আসেন। মাধ্যমিক পরীক্ষার জেলা কনভেনর রাজীব মুখোপাধ্যায় বলেন, প্রথম দিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়েছে।  পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন এসিপি ইপ্সিতা দত্ত। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)