নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: গোকর্ণ সাব পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার এবং পোস্টাল অ্যাসিস্ট্যান্টর নামে ন’ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ পেয়ে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করে ডাক বিভাগ। সমস্ত নথি খতিয়ে দেখার পর আর্থিক তছরুপের অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে গোকর্ণ সাব পোস্ট অফিসের দুই ডাক কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। বিভাগীয় তদন্ত শেষ হওয়ার পর গত শনিবার কান্দি থানায় অভিযোগ জমা দিয়েছে ভারতীয় ডাক বিভাগের আধিকারিকরা। পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। যদিও তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি পোস্ট মাস্টারের।
জানা গিয়েছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে পোস্ট অফিসের বিভিন্ন স্কিমে টাকা জমা দিয়েছেন উপভোক্তারা। সেই টাকা ব্রাঞ্চ অফিস থেকে ধারাবাহিকভাবে সাব পোস্ট অফিসে জমা পড়ে। সাব পোস্ট অফিস সেই টাকা সিস্টেমে এন্ট্রি না করিয়ে আত্মসাৎ করেছে বলেই অভিযোগ। ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই তছরুপ চলেছে। ওই অফিসের দায়িত্বে থাকা দুজনই এই ঘটনায় অভিযুক্ত বলে দাবি ডাক বিভাগের আধিকারিকদের। তবে যে সময়ে ঘটনা ঘটেছে, সেসময় চার্জে ছিলেন না সাব অফিসের পোস্ট মাস্টার রবীন্দ্রনাথ মিঞ্জি। তাঁর জায়গায় অস্থায়ীভাবে পোস্ট মাস্টারের দায়িত্বে ছিলেন ওই অফিসেরই পোস্টাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রাম মুরারি। সাব পোস্ট অফিসের অন্তর্গত যে সব ব্রাঞ্চ অফিস আছে, সেখানে ওই নির্দিষ্ট সময়ে যে যে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়েছে, তার বিবরণ সংগ্রহ করেছেন ডাক বিভাগের আধিকারিকেরা। কান্দি থানার পুলিস সেগুলি খতিয়ে দেখছে।
মুর্শিদাবাদ জেলার হেড পোস্ট অফিসের (বহরমপুর) এক আধিকারিক বলেন, একজন পাঁচ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা এবং অপরজন তিন লক্ষ ২০ হাজার টাকা তছরুপ করেছে। এই ঘটনায় প্রথমেই বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। সেই রিপোর্ট দেখে ডিসেম্বর মাসে দুজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ জানানোর নির্দেশ পেয়েই, দু’ দিন আগে ওই দুজনের নামে থানায় এফআইআর করা হয়েছে। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে।
যদিও গোকর্ণ সাব অফিসের ওই পোস্ট মাস্টার রবীন্দ্রনাথ মিঞ্জি বলেন, আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। যে সময়ে ওই ঘটনা ঘটেছে, সেই সময়ে আমি ছুটিতে ছিলাম। বিভাগীয় তদন্ত একেবারে সঠিক হয়নি। সঠিকভাবে তদন্ত হলে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হব। আমার সময়কালে খাতাপত্র দেখলেই সবটা পরিষ্কার হবে। এখন পুলিস তদন্ত করছে আমি জানি। আমি তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব। পোস্টাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রাম মুরারিকে ফোন করা হলে, তিনি বিষয়টি শোনার পর, পরে কথা বলব বলে ফোন কেটে দেন।
জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, মামলাটির অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। কীভাবে এই টাকা তছরুপ হল সেটা দেখা হচ্ছে। পোস্ট অফিস একটি বিভাগীয় তদন্ত করেছে। সেই সমস্ত রিপোর্ট ও নথি আমরা সংগ্রহ করছি।