রামপুরহাটের জঙ্গলে ‘পুষ্পারাজ’, লাল চন্দনবোঝাই গাড়ি সহ পুলিসের জালে ৪
বর্তমান | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রামপুরহাটের হস্তিকাঁদা জঙ্গলে ‘পুষ্পারাজ’! পুষ্পারাজ সিনেমায় বিরল লাল চন্দনের গুঁড়ি নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ায় বোকা বনে যান উর্দিধারীরা। পরে পুষ্পা জল থেকে তুলে নেয় সুগন্ধী কাঠ। কিন্তু রিয়েল লাইফে ফল অন্যরকমও হতে পারে। যেমনটা হয়েছে রামপুরহাটে। রাতের অন্ধকারে জঙ্গল থেকে দামি লাল চন্দনের গাছ কেটে ট্রাক্টরে চাপিয়ে চলছিল পাচার। খবর পেয়ে পুলিস হানা দিয়ে দু’টি লাল চন্দন গাছের গুঁড়ি বোঝাই একটি ট্রাক্টর, একটি চারচাকা গাড়ি, মোটর বাইক সহ চারজনকে আটক করে। গাছের গুঁড়িগুলি নিকটবর্তী কাষ্ঠগড়া বিট অফিসে রাখা হয়েছে। রেঞ্জার সঞ্জীবকুমার সাহা বলেন, লাল চন্দন নয়, পিয়াশোল বা মুর্গা গাছ। যদিও পুলিসের দাবি, উদ্ধার হওয়া গাছের গুঁড়িগুলি লাল চন্দনের। প্রয়োজনে নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে।
ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া হস্তিকাঁদা জঙ্গল। এখানে শাল, সেগুন, মেহগনির পাশাপাশি লাল চন্দনের বহু গাছ রয়েছে। প্রায়শই এই এলাকা থেকে রাতের অন্ধকারে গাছ কেটে পাচার হয়। অভিযোগ, বনদপ্তরের পক্ষ থেকে কড়া নজরদারি না চালানোয় জঙ্গল ক্রমশ ফাঁকা হয়ে আসছে। পুলিস জানিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়াররা মেশিন দিয়ে গাছ কাটার আওয়াজ পান। তাঁরা গিয়ে দেখতে পান, কয়েকজন বনভূমি থেকে দু’টি লাল চন্দন গাছ কেটে চুরি করছে। কয়েক হাত দূরে একটি চারচাকা গাড়ি ও বাইক দাঁড়িয়েছিল। তড়িঘড়ি খবর পেয়ে পুলিসের একটি দল পৌঁছে চারজনকে ধরে ফেলে। কয়েকজন পালিয়ে যায়। পুলিস লাল চন্দন গাছের একাধিক গুঁড়ি বোঝাই ট্রাক্টর, বাইক ও চারচাকা গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গাছ কাটার লোক ও গাড়ি দু’টির চালককে আটক করা হয়েছে। সকলের বাড়ি মাড়গ্রামে। খবর পেয়ে এদিন সকালে হস্তিকাঁদা জঙ্গলে আসেন বনদপ্তরের কাষ্ঠগড়ার ভারপ্রাপ্ত বিট অফিসার মুরসালিম শেখ। দু’টি বড় গাছ কাটা হয়েছে বলে তিনি দেখতে পান। সেখানে গাছের কিছু কাটা অংশ পড়ে ছিল। পরে খোঁজ চালিয়ে কিছুটা দূরের শালতোরা গ্রামের পুকুরপাড় থেকে গাছের আরও ১৬টি কাটা অংশ উদ্ধার করেন। সেগুলি ট্রাক্টরে চাপিয়ে বিট অফিসে নিয়ে আসেন। মুস্থানীয় বাসিন্দা বিমান ঘোষ, বর্ণ ঘোষরা বলেন, এগুলি লাল চন্দনের গাছ। বাইরে থেকে লোকজন এসে কেটেছে। - নিজস্ব চিত্র