নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদ জেলায় সম্পূর্ণ নির্বিঘ্নেই মিটল মাধ্যমিকের প্রথম দিনের পরীক্ষা। সোমবার ছিল বাংলা। বহরমপুর, কান্দি, ডোমকল, জঙ্গিপুর ও লালবাগ মহকুমার শহরগুলিতে এদিন সকাল থেকে রাস্তায় বাড়তি পুলিস মোতায়েন ছিল। বহরমপুর শহরে পুলিস সুপার নিজে রাস্তায় নেমে তদারকি করেন। মাধ্যমিকের পাশাপাশি এদিন থেকেই হাইমাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কোথাও কোনও যানজট হতে দেয়নি ট্রাফিক কর্মীরা। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে যায় পরীক্ষার্থীরা। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) অমরকুমার শীল বলেন, প্রথম দিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই হয়েছে। কোথাও কোনও সামান্যতম সমস্যাও হয়নি।
বহরমপুর শহরের বেশ কিছু জায়গায় পুলিস কর্মীরা পরীক্ষার্থীদের হাতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। জেলাজুড়ে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও পরীক্ষার্থীদের ফুল, মিষ্টি, জল ও পেন দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমানও পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দেওয়ার একটা আলাদা টেনশন থাকে। সমস্ত পড়ুয়াকে আমরা শুভেচ্ছা জানিয়েছি। জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছিল, প্রতিটি বিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে। আমরা সকল পড়ুয়ার সাফল্য কামনা করি।
পুলিস ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রেজিনগরে এক ছাত্রী পরীক্ষা কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় তাকে উদ্ধার করে পুলিস কর্মীরা বেলডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। সেখানেই পর্ষদের নিয়মমাফিক গার্ড রেখে তার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। কান্দি থানার বাঘডাঙা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী অন্তঃসত্বা থাকার কারণে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিয়েছে। এই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল কান্দি রাজা মণীন্দ্রচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়। পাশাপশি, তুহিনা খাতুন ভরতপুর থানার গয়েশবাদ অচলা বিদ্যামন্দিরের পরীক্ষার্থী। তার পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল ভরতপুর আলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। পরীক্ষা শুরুর ২ ঘণ্টা পর সে অসুস্থ হয়ে যায়। পরে ভরতপুর গ্রামীণ হাসপাতালে বাড়তি সময় দিয়ে তার পরীক্ষা নেওয়া হয়। জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের বেডে বসেই পরীক্ষা দেয় অসুস্থ এক ছাত্রী। মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই অত্যাধিক পেটে ব্যথায় স্কুলের সেন্টারে পৌঁছতে পারেনি খড়িবোনা হাইস্কুলের সাহিনা খাতুন। তার পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল মির্জাপুর দ্বিজপদ হাইস্কুলে। বিষয়টি নজরে আসতে তড়িঘড়ি তাকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হয় স্কুল ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সমস্ত নিয়ম মেনেই তার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে বলেই জানিয়েছে মির্জাপুর হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, হাসপাতালের বেডে বসে পরীক্ষা দিল ডোমকলে দুর্ঘটনায় জখম এক পরীক্ষার্থী। সোমবার ডোমকল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বেডে বসেই পরীক্ষা দেয় সে। ডোমকলের হরিশংকরপুরের একটি স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছিল মহম্মদ হাসান নামের এক পরীক্ষার্থীর। এদিন সকালে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় সে কাটাকোপরা এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় জখম হয়। তাকে উদ্ধার করে ডোমকল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিসি নিরাপত্তায় হাসপাতালের বেডে বসেই পরীক্ষা দেয় সে।
মুর্শিদাবাদের পুলিস সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, প্রথম দিনের মাধ্যমিক পরীক্ষা খুব ভালোভাবে হয়েছে। কয়েকজন পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় তাদের আমরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছি এবং সেখানে তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।