খড়দহের ঐতিহাসিক রাসখোলা ঘাট সংস্কারে বরাদ্দ প্রায় ১ কোটি
বর্তমান | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: গঙ্গার প্রবল বানে ভেঙে গিয়েছিল খড়দহের ঐতিহাসিক রাসখোলা ঘাট। পাঁচ বছর বেশি সময় ধরে ওই ঘাট বেহাল হয়ে পড়েছিল। তবুও বিপদের ঝুঁকি নিয়ে রোজ শয়ে শয়ে মানুষ এই ঘাটে স্নান করে। ফি বছর পুজোর সময়ে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য বালির বস্তা দিয়ে অস্থায়ী কাঠামোও তৈরি করতে হয়। তাই দীর্ঘদিন ধরে এই ঘাট সংস্কারের দাবি জানাচ্ছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। সম্প্রতি ওই ঘাট সংস্কারের জন্য নগরোন্নয়ন দপ্তর প্রায় এক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তাতে ঘাট সংস্কারের পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নের কাজও করা হবে।
১৭৫০ সালে খড়দহের গঙ্গাপাড়ে রাসমন্দির তৈরি হয়েছিল। তারও সাত বছর পর অর্থাৎ ১৭৫৭ সালে ওই মন্দিরের সামনে তৈরি করা হয়েছিল বাঁধানো ঘাট। সেটি রাসখোলা ঘাট নামে পরিচিত। এই ঘাটের মাথার উপর নহবৎখানাও ছিল। এই ঘাট দিয়ে খড়দহে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, মা সারদা, ভগিনী নিবেদিতা শ্যামের মন্দিরে এসেছেন। এই ঘাটেই প্রভু নিত্যানন্দের ছেলে বীরভদ্র বহু মানুষকে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা দিয়েছিলেন। আগে এই ঘাটে ফেরি চলাচলও করত। পানসি নৌকা, পালতোলা নৌকার ভিড় লাগত। এখন ফেরি চলাচল না হলেও প্রত্যেক বছর খড়দহের দু’শোর বেশি দুর্গা প্রতিমা সহ বিভিন্ন প্রতিমা বিসর্জন করা হয়।
কেএমডিএ শেষ ২০০৩ সালে খড়দহের রাসখোলা ঘাট সহ মোট পাঁচটি ঘাটের সংস্কার করেছিল। কিন্তু তারপর বড় কোনও সংস্কারের কাজ হয়নি। তার উপর বছর পাঁচেক আগে প্রবল বানের দাপটে রাসখোলা ঘাটের বড় অংশ ভেঙে গিয়েছিল। তারপর থেকে যতদিন গিয়েছে, ঘাট আরও বিপজ্জনক হয়েছে। সম্প্রতি, নগরোন্নয়ন দপ্তর পুরসভাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, রাসখোলা ঘাটের সংস্কার, পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সৌন্দর্যায়নে জন্য ৯৯ লক্ষ ৯৭ হাজার ৬০০ টাকার প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার বিভিন্ন ঘাটের আদলে এই ঘাটেও স্লোপিং তৈরি করা হবে। যাতে ঝুঁকি ছাড়াই প্রতিমা নিরঞ্জন করা সম্ভব হয়। খড়দহ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সায়ন মজুমদার বলেন, ওই ঘাট সংস্কারের জন্য নগরোন্নয়ন দপ্তর প্রায় এক কোটি টাকা দিয়েছে। খড়দহের অন্যতম প্রাচীন এই ঘাট দীর্ঘদিন ভাঙা ছিল। দ্রুত তা মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। নিজস্ব চিত্র