• কোনও পরিচয়পত্র নেই, আধপেটা খেয়ে কাটছে বিশেষভাবে সক্ষমের
    বর্তমান | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা তারকেশ্বর: তারকেশ্বর বালিগড়ির এক নম্বর পঞ্চায়েতের বড়দিঘির পাড় এলাকায় কয়েকটি আদিবাসী পরিবারের বসবাস। সেই এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় হেমব্রম। তিনি সাত বছর বয়সে বাবা-মাকে হারান। সঙ্গী বলতে ছিলেন বোন। একটি ইটভাটাতে কাজ করে মাথা গোঁজার একটি ঠাঁই তৈরি করেছিলেন বোন। তারপর তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। সঞ্জয় মুম্বইয়ে গয়নার কাজ করতে চলে যান। তবে কিছুদিন পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাঁটুতে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে ফিরে আসেন বড়দিঘির পাড়ে। চিকিৎসা করান। তবে রোগের উপশম হয় না। ধীরে দু’পা অচল হয়ে যায়। এখন ঘরে বন্দি। লাঠি হাতে কোনওরকমে চলাচল করেন। টাকা নেই হলে চিকিৎসা বন্ধ। তাঁর বাড়িতে শৌচালয় পর্যন্ত নেই। লাঠি হাতে যেতে হয় জঙ্গলে। বিশেষভাবে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত আধার, রেশন, প্রতিবন্ধী কার্ড করাতে পারেননি। ফলে কোনও সরকারি সুবিধা পান না। 


    দীনবন্ধু কোলে নামে তাঁর এক প্রতিবেশী বলেন, ‘আমি সাধ্যমত সাহায্য করি।‌ সরকারের সহযোগিতা পেলে ছেলেটির উপকার হবে।’ সঞ্জয় জানালেন, তিনি দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে রেশন কার্ডের আবেদন করেছিলেন বছরখানেক আগে। তবে হয়নি। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় বাবা-মা মারা যাওয়ায় আধার কার্ড হয়নি। এর ফলে সরকারের কোনও সুযোগ-সুবিধা পাই না। আমার বয়স সঠিক জানি না। ২৫-২৬ হবে। এখন ঠিকমত খাওয়া জোটে না। বাড়িতে কোনও শৌচালয় পর্যন্ত নেই। কোথাও গিয়ে আবেদন করার শারীরিক ক্ষমতা নেই। এই এলাকার অনেকেই আমার অবস্থা জানেন। কারও সহযোগিতা পেলে খুব উপকৃত হব।’ সকল মুর্মু নামে অন্য এক প্রতিবেশী বলেন, ‘খুব কষ্ট করে সঞ্জয়কে শৌচালয় পর্যন্ত যেতে হয়। দু’বেলা ভালো করে খেতে পর্যন্ত পায় না। কোনওরকম সহযোগিতা পেলে খুব উপকৃত হবে।’ আর তারকেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি প্রদীপ সিংহ রায় জানান, ‘ছেলেটির এই দুরাবস্থার কথা আমাদের জানা ছিল না। আপনাদের মাধ্যমে শুনলাম। দ্রুত সরকারের সবরকম সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।’ - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)