• আজ শুরু মিনিকুম্ভ, সেজেছে ত্রিবেণীর সপ্তর্ষিঘাট
    বর্তমান | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে হুগলির ত্রিবেণীর কুম্ভমেলা। বিধিবদ্ধ পদ্ধতিতে ভোরে পুজো-অর্চনার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে পুণ্যতীর্থে উপাসনা ও স্নানের আয়োজন। সোমবার দিনভর বাঁশবেড়িয়ার সপ্তর্ষিঘাটে ছিল সাজসাজ রব। উদ্যোক্তা থেকে পুলিস, প্রশাসন ও পুরসভার তৎপরতা ছিল নজরকাড়া। ইতিমধ্যেই সাধুসন্তদের উপস্থিতিতে বাঁশবেড়িয়া জুড়ে তৈরি হয়েছে বিচিত্র আবহ। এদিন কুম্ভের আয়োজন খতিয়ে দেখতে সেখানে গিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রবীণ নেতা তপন দাশগুপ্ত। আয়োজকদের দাবি, মেলা ও ১২ ফেব্রুয়ারির শাহিস্নানকে ঘিরে ব্যাপক ভিড় হবে। অনেক সাধু যেমন এসে গিয়েছেন, তেমনই মঙ্গলবার ভোরের আগে আরও সাধু এসে পড়বেন। পাশাপাশি, রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে সাধারণ মানুষ ও পুণ্যার্থী সমাগমও হবে।


    প্রয়াগের কুম্ভে ইতিমধ্যেই একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই পরিস্থিতিতে ত্রিবেণী কুম্ভ নিয়ে প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই বারবার ভিড় সামাল দেওয়া এবং দুর্ঘটনা এড়ানো নিয়ে চর্চা হয়েছে। এদিনও প্রশাসনিক ও পুলিসি প্রস্তুতিতে তারই ঝলক দেখা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ত্রিবেণীর গঙ্গার ঘাটে কুম্ভস্নান ও কুম্ভমেলা চলবে। এদিন বিধায়ক বলেন, বাঁশবেড়িয়া ও ত্রিবেণীর অতীত ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে গত কয়েক বছর ধরেই আমরা বর্ণময় ব্যবস্থাপনায় কুম্ভের আয়োজন করেছি। ইতিমধ্যেই তা সন্তমহলে আগ্রহ তৈরি করেছে। গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল থেকে সাধুরা এসেছেন। আমি সমস্ত ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখেছি। খুবই সুন্দর আয়োজন হয়েছে। নির্বিঘ্নে কুম্ভ পার করতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুরসভা যথাযথ প্রস্তুতি রেখেছে। এদিন বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগী বলেন, আমরা মূলত লক্ষ্য রাখছি পরিষেবার দিকে। স্বাস্থ্য থেকে পানীয় জল, গঙ্গাদূষণ প্রতিরোধ থেকে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকবে একাধিক ক্যাম্প। পুরসভার বিশেষ দল তিনদিন ধরে মেলা ও স্নানের ঘাটে থাকবে। পুণ্যার্থীদের জন্য যাবতীয় দায়িত্ব পালন করা হবে। হুগলি গ্রামীণ পুলিস কর্তারা জানিয়েছেন, ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তার জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। স্থলের সঙ্গে জলেও নজরদারি রাখা হবে। 


    তিন নদীর ত্রিবেণী সঙ্গমে হুগলির বাঁশবেড়িয়া অবস্থিত। প্রাচীনকাল থেকেই তাই পুণ্যতীর্থ হিসেবে পরিচিত এই ত্রিবেণী। প্রায় ৭০০ বছর আগে প্রয়াগতীর্থে যাওয়ার আগে সাধুসন্তরা অস্থায়ী শিবির করে স্নানপর্ব সারতেন ত্রিবেণীতে। এমন তথ্যকে ঘিরেই গত কয়েক বছর ধরে বাঁশবেড়িয়ার ঘাটে কুম্ভস্নানের আয়োজন করা হয়। সময়ের সঙ্গে সেই আয়োজনে লেগেছে জৌলুস, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাধুসন্তদের ভিড় বেড়েছে। ফলে, এক নতুন সাজে সেজে উঠেছে এবারের কুম্ভস্নানের পর্ব। যেমন বেনজির ভিড় জমিয়েছেন সাধুসন্তরা, তেমনই ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে হুগলির জনমানসে। এই নতুন উন্মাদনাকে সঙ্গে নিয়েই আজ, মঙ্গলবার ভোরে সপ্তর্ষিঘাটে বাজবে পুণ্যশঙ্খ। শুরু হবে তিনদিনের মেলা ও স্নানপর্ব। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)