• পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে ইভটিজিং, বাড়ি ফিরে আত্মঘাতী মাধ্যমিক ছাত্রী
    বর্তমান | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত ও কলকাতা: জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। মাধ্যমিকের সেন্টারে যাওয়ার সময়েই ইভটিজিংয়ের শিকার ছাত্রী। আসার সময়েও একই ঘটনা। সেই অপমানে আত্মহননের পথ বেছে নিল পরীক্ষা ফেরত ছাত্রী। অন্যদিকে, কসবায় আগামী বছরের এক মাধ্যমিক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। পড়াশোনা না করে রাতে বন্ধুর বাড়ি থেকে ফেরার জন্য বকাবকি করেন মা। সেই অভিমানে আত্মঘাতী হল দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী। 


    সোমবার উত্তর ২৪ পরগণার অশোকনগর থানা এলাকায় বাংলা পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পর ঘর থেকে কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতার নাম সোনালি খাতুন (১৫)। গুমার বাসিন্দা সে। সোমবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ কিশোরীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে অশোকনগর থানার পুলিস। আজ, বারাসত মেডিক্যাল কলেজে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা। পরিবারের দাবি, কিশোরীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছে পাড়ার ওই যুবক। আজ থানায় যুবকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছে মৃতের পরিবার।  


    স্থানীয় সূত্রের খবর, সোনালির আসল বাড়ি দত্তপুকুর থানা এলাকায়। কয়েকবছর আগে তার মা আজমিরা বিবি মারা যান। এরপর থেকেই কিশোরী গুমার লক্ষ্মীপুরে মামাবাড়িতে থাকে। গুমা হাইস্কুলের মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী সে। তার পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল রাজীবপুর হাইস্কুলে। সোমবার পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার সময় তাকে পড়শি এক যুবক কটুক্তি করে। অশ্লীলভাবে গালিগালাজও করা হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষ করে ফেরার পথেও রাস্তার মাঝে তাকে আটকে গালিগালাজ করার পাশাপাশি জোর করে বিয়ে করার চাপও দেওয়া হয় বলে দাবি করেছে পরিবারের লোকজন। এরপর বাড়িতে এসে বিষয়টি জানায় সোনালি। দুপুরের খাওয়া-দাওয়াও করেনি সে। পরিবারের লোকজন যখন বাইরে কাজে যান, তখন নিজের ঘরে গলায় ফাঁস দেয় সোনালি। মৃতার মামা আশরব আলি মল্লিক বলেন, পাড়ার ছেলেটি বারেবারে ভাগ্নিকে বিরক্ত করত। জোর করে বিয়ে করার জন্য চাপও দিত। আমরা বেশ কয়েকবার নিষেধ করেছিলাম। ভাগ্নি বাড়িতে এসে জানিয়েছিল পরীক্ষা ভালোই হয়েছে। 


    অন্যদিকে, পরের বছর (২০২৬) মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল কসবা থানা এলাকার শরৎ ঘোষ গার্ডেন রোডের বাসিন্দা এক ছাত্রীর। বাড়িতে বাবা, মা ও ভাই রয়েছে তার। পুলিস জানিয়েছে, সম্প্রতি সে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তার জেরে পড়াশোনায় উদাসীন হয়ে পড়ে ১৬ বছরের ছাত্রী। রবিবার গভীর রাতে বন্ধুর বাড়ি থেকে ফেরত আসে সে। তার জেরে বকাবকি করেন মা। সোমবার সকালে ঘর থেকে ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়। তাতে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিস। যদিও ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি থানায়। 
  • Link to this news (বর্তমান)