• সহকর্মীর সঙ্গে বন্ধুত্ব মানেই পরকীয়া ভাবা নিষ্ঠুরতা: কোর্ট
    এই সময় | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • অফিসের সহকর্মীর সঙ্গে বন্ধুত্ব মানেই পরকীয়া ধরে নেওয়া যায় না। স্বামী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকাকালীন সেই সহকর্মী মহিলা আসতেন মানেই তাঁর সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে, তা ধরার কোনও কারণ নেই। এই পর্যবেক্ষণে জেলা আদালতের রায় খারিজ করে স্বামীর পক্ষে ডিভোর্সের ডিক্রি জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট।

    হাইকোর্টের আরও পর্যবেক্ষণ, এক দশকের বেশি আগে দম্পতির সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। স্ত্রী এক দিকে স্বামীর সঙ্গে ঘর করায় আগ্রহী বলে দাবি করছেন, অন্য দিকে স্বামীর বিরুদ্ধে একের পর এক ফৌজদারি মামলা দায়ের করছেন। দু’টো একসঙ্গে চলতে পারে না।

    বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ স্বামীর পক্ষে ডিভোর্সে সায় দিয়েও অবশ্য জানিয়েছে, স্ত্রী ও সন্তানের ভদ্রভাবে জীবনযাপনের জন্যে প্রয়োজনীয় কর্তব্য পালনে বাধা নেই স্বামীর। স্ত্রী যে এককালীন আর্থিক দাবি জানিয়েছেন অন্য ফোরামে, তাতেও ডিভোর্সের এই নির্দেশ বাধা হবে না।

    ঠাকুরপুকুর এলাকার বাসিন্দা যুবকের সঙ্গে ২০০৭–এ বিয়ে হয় তরুণীর। বিয়ের পর পরই দু’জনের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হয়। স্বামী–সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে ৪৯৮ (এ)–সহ বিভিন্ন ধারায় থানায় অভিযোগও দায়ের করেন স্ত্রী। আবার ২০১০–এ থানায় গিয়ে ওই অভিযোগ নিয়ে আর না এগোতে চাওয়ার কথাও জানান। বহুদিন বাপের বাড়িতে থাকার পর স্ত্রী ২০১২–র সেপ্টেম্বরে শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। ২০১৪–য় কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। তার পর ফের দু’জনের সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। আবার স্ত্রী থানায় অভিযোগ করেন। তার পরেই স্বামী ডিভোর্সের মামলা দায়ের করেন। ২০১৭–য় সেই আবেদন খারিজ করে জেলা আদালত। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে স্বামী হাইকোর্টে আবেদন করেন।

    ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য, এখন স্বামীর বিরুদ্ধে প্রমাণহীন ভাবে সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও আনা হয়েছে। অথচ নথিপত্র বলছে, প্রায় এক দশক আগেই স্বামী–স্ত্রীর সম্পর্কে ভাঙন ধরেছিল। ফলে এখন স্বামীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিষ্ঠুরতার নামান্তর। সম্পর্ক যেখানে এত তলানিতে, সেখানে ডিভোর্সের আবেদন খারিজ করে দু’জনকে একসঙ্গে থাকতে বলা দু’জনের প্রতিই নৃশংসতা।

  • Link to this news (এই সময়)